যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে কার্যকর ও ব্যয়বহুল সমরাস্ত্র

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী- সংগৃহীত -

  • আসিফ মাহমুদ
  • ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৫২

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী। সাতটি মহাদেশে এই সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছড়িয়ে আছে। এর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বার্ষিক বাজেট ৭শ বিলিয়ন ডলারের কাছে। যে সেনবাহিনীর হাতে আছে সবচেয়ে আধুনিক সব সমরাস্ত্র।


যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে ৭৫ টি বি-৫২ বোমারু বিমান আছে। বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৬ টি বি-৫২ বোমারু বিমান ভারত মহাসাগরের দিয়াগো গার্সিয়ায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এই যুদ্ধ বিমানটি ৩৫ টন ওজনের অস্ত্র গোলাবারুদ, মাইন, ও মিসাইল বহন করতে পারে।
১৯৫২ সালে এই বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে যোগ হলেও প্রতি বছর এটির আপগ্রেড করা হয়েছে। প্রতিটি বি-৫২ বোমারু বিমান ২০টি ক্রুজ মিসাইল বহন করতে পারে। ক্রুজ মিসাইল গুলো নিজস্ব গাইডেন্স ব্যবস্থায় টার্বোফোন ইঞ্জিন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুত আঘাত হানতে পারে।


ব্যাট উইং হেভি এই বোমারু বিমান পারমানবিক বোমা বহন করতে পারে। চার ইঞ্জিনের এই যুদ্ধ বিমানটি মিসৌরির হোয়াইটম্যান এয়ারফোর্স ঘাটি থেকে চলাচল করে। তবে এখান থেকে যে কোনো সামরিক ঘাটিতে অবতরন করতে পারে। মার্কিন অস্ত্রাগারের সবচেয়ে অপরমানু বোমা জিবিউ-৫৭ বোমা বহন করতে পারে। ৩০ হাজার পাউন্ডের ওজনের ৩০ ফুট লম্বা এই বোমা মাটির গভীরে আঘাত করতে সক্ষম।


চার ইঞ্জিনের বি-১ বোম্বারস যুদ্ধ বিমান যুক্তরাষ্ট্রের ৬০টির মতো আছে। এই যুদ্ধ বিমান ক্রুজ মিসাইল, গ্রাভিটি বোম্ব এবং নেভাল মাইনসহ ৭৫ হাজার পাউন্ডের সমরাস্ত্র বহন করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বহরে ১৮০টি এফ-২২ স্টেলথ ফাইটার রয়েছে। যেগুলো বিমান বাহিনীর সবচেয়ে সক্ষম যুদ্ধ বিমান হিসাবে বিবেচিত। যে কোনো যুদ্ধ বিমান ও রাডার সিস্টেম ফাকি দিয়ে চলতে পারে। এই যুদ্ধ বিমান এয়ার টু গ্রাউন্ড গাইডেট মিসাইল বহন করতে পারে। এই বিমান রাডারে ধরা না পড়ার কারনে শত্রুর আকাশ সীমায় সহজে ঢুকে পড়তে পারে।


মার্কিন নৌবহরে কয়েক ডজন সাবমেরিন রয়েছে। যেগুলো নি:শব্দে পানির নীচে চলাচল করে।স্থলও সমুদ্রের লক্ষ্য বস্তুতে কয়েক শত টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়তে পারে। এরমধ্যে সবচেয়ে সক্ষম সাবমেরিন হচ্ছে ওহিও ক্লাস গাইডেট মিসাইল সাবমেরিন। যেটি ১৫৪ টি পর্যন্ত টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র বহন করতে পারে। ১ হাজার পাউন্ড ওয়ারহেড দিয়ে সজ্জিত এই ক্ষেপনাস্ত্র ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত স্বাধীন লক্ষ্যব¯‘তে আঘাত হানতে পারে। এই মিসাইল গুলো গাইডেন্স সিস্টেমের মাধ্যমে ১৫টি লক্ষ্যবস্তুতে চিহিৃত করতে পারে। ওহিও ক্লাস সাবমেরিন ছাড়াও ভার্জিনিয়া ক্লাস ও লসএঞ্জেলেস ক্লাস সাবমেরিন আছে। যেগুলো চার ডজনের বেশি টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র বহন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহরে ১১ টি বিমানবাহী রনতরী আছে। এরমধ্যে ১০টি নিমিটজ ক্লাস এবং ১টি ফোর্ড ক্লাস। এরমধ্যে তিন থেকে চারটি যে কোনো মহুর্তে যুদ্ধের জন্য প্র¯‘ত থাকে। মধ্যপ্রাচ্যে ইউএস হ্যারি টুম্যান নামে একটি বিমানবাহী রনতরী অবস্থান করছে। এগুলো মাঝে মাঝে অবস্থান পরিবর্তন করে। এই রনতরীগুলো ৬০ টি যুদ্ধ বিমান বহন করা যায়। যার মধ্যে এফ এ ১৮ যুদ্ধ বিমান রয়েছে। যুদ্ধ বিমানের পাশাপাশি ৯টি অ্যাসল্ট জাহাজ বহন করে। এই জাহাজগুলো ছোট যুদ্ধ বিমান বহন করা যায়। এই রনতরী এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধ বিমান বহন করতে পারে।


যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরে থাকা গাইডেট মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ক্রুজার গুলো যুদ্ধ বিমান বহন করে স্বাধীন ভাবে আঘাত করতে পারে। আলেলি বার্ক শ্রেনীর ৭০টি ডেস্ট্রয়ার যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরে রয়েছে। এগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের মেরুদন্ড বলা হয়। ৫৬টি পর্যন্ত টমহক ক্ষেপনাস্ত্র বহন করতে পারে।