শীর্ষ সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন


  • মেহেদী হাসান
  • ১৬ এপ্রিল ২০২১, ০৬:০৩

লকহিড মার্টিন বিশ্বের শীর্ষ সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। লকহিড মার্টিনের সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির মেরিল্যান্ডে। ২০২০ সালে এর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১০ হাজার। শক্তিশালী যুদ্ধবিমান, মিসাইল, রকেট, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক, বোমাসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র নির্মাণ করে লকহিড। বর্তমান বিশ্বে মোস্ট অ্যাডভান্সড ফাইটার জেট হিসেবে পরিচিত এফ-২২ এবং এফ-৩৫ এর নির্মাতা লকহডি মার্টিন। লহহিড মার্টিন তার অধিকাংশ সমরাস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্র আর্মির কাছে। লকহিড মার্টিনের নির্মাণের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী হেলিকপ্টার।

যুদ্ধবিমান ছাড়াও লকহিড মার্টিন শক্তিশালী রাডার সিস্টেম, সেন্সর, সাইবার ওয়ার, মহাকাশ মিশন, জলে স্থলে এবং আকাশে সব বাহিনীর ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল, ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিলেন্স, এভয়নিক্স, রিকনিস্যান্স, কমিউনিকেশনস সিস্টেম, ইনফরমেশন ফিউশন অ্যান্ড ডেটা অ্যানালিটিক্স, মিসাইল কন্ট্রোল সিস্টেম, ড্রোন বিমান তৈরির সাথে যুক্ত।

লকহিড মার্টিন বর্তমানে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাইপারসনিক অস্ত্র উদ্ভাবন কর্মসূচীর সাথে। কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র হাইপারসনিক মিসাইল পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছে। এ হাইপারসনিক মিসাইল বি-৫২ বোমারু বিমান থেকে ছোড়া হবে। এটি একটি এয়ার লঞ্চড রেপিড রেসপন্স হাইপারসনিক মিসাইল। এটি উদ্ভাবন করেছে লকহিড মার্টিন।

লকহিড মার্টিন যেসব সামরিক বিমান নির্মাণ করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফিফথ জেনারেশন স্টেলথ ফাইটার এফ-২২ র‌্যাপ্টর ও এফ-৩৫ । এ দুটি বিমানকে বর্তমান বিশ্বের মোস্ট এডভান্সড ফাইটার জেট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

দীর্ঘকাল ধরে সারা বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় ফোর্থ জেনারেশন সুপারসনিক ফাইটার জেট এফ-১৬ বিমানেরও নির্মাতা লকহিড মার্টিন। এফ সিরিজের আরো রয়েছে এফ-২, এফ-২১ ।

সারা বিশ্বের সেনাবাহিনীতে পরিচিত লকহিড মার্টিনের সি সিরিজের বিভিন্ন সামরিক পরিবহন বিমান। লকহিড মার্টিনের সি সিরিজের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সি-১৩০ হারকিউলিস। সি সিরিজের কমপক্ষে ৪০ ধরনের সামরিক বিমান রয়েছে।

বিশ্বের ৬৯টি দেশের আর্মি ব্যবহার করছে লকহিড মার্টিনের সি-১৩০ হারকিউলিস পরিবারের বিমান। বাংলাদেশেও বেশ কয়েকটি রয়েছে লকহিড মার্টিনের সামরিক পরিবহন বিমান। লকহিড মার্টিনের অপর যেসব সামরিক বিমান রয়েছে সেগুলো হলো রহস্যময় গোয়েন্দা বিমান ইউ-২ ড্রাগন লেডি, পি-৩ অরিয়ন, এলএম ১০ জে, হাইব্রিড এয়ারশিপ, কমার্সিয়াল এয়ারক্রাফট। লকহিড মার্টিনের বেশ কিছু কমার্সিয়াল এবং বেসামরিক পরিবহন বিমনাও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৯৮ বছরের পুরনো বিখ্যাত হেলিকপ্টার ও বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিকরস্কি ২০১৫ সালে কিনে নিয়েছে লকহিড মার্টিন। সিকরস্কির বিখ্যাত হেলিকপ্টারের মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক হক, সি হক, সুপার হক, সি গার্ড, সি কিং, জে হক, এ এ এইচ, সিকরিক্স ফায়ার হক, সিকরক্সি কমব্যাট হেলিকপ্টার প্রভতি। সিকরস্কির প্রায় ৫০ ধরনের হেলিকপ্টার রয়েছে। বিমান রয়েছে ১৯ ধরনের।

লকহিডের সবচেয়ে এডভানন্সড হেলিকপ্টার হলো এক্স-২ টেকনোলজির ডিফায়ান্ট এক্স এবং রেইডার এক্স। এ ছাড়া রয়েছে এস-৯৭ রেইডার, এসবি -১ ডিফায়ান্ট। এসব হেলিকপ্টারকে বলা হয় হেলিকপ্টার অব দি ফিউচার। ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আধুনিক প্রযুুক্তির এসব হেলিকপ্টার। এসব হেলিকপ্টারের এখনো ফ্লাইট টেস্ট চলছে।

শক্তিশালী মিসাইল ও মিসাইল সিস্টেম, বিভিন্ন ধরনের গাইডেড ও আনগাইডেড বোমা তৈরি করে লকহিড মার্টিন। ১৯৫৫ সাল থেকে লকহিড মার্টিন যুক্ত শক্তিশালী ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল উদ্ভাবনের সাথে। গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র এয়ার ফোর্সকে তারা ৭ শতাধিক এ মিসাইল সরবরাহ করেছে।

লকহিড মার্টিনের শক্তিশালী আরেকটি একটি মিসাইল প্যাট্রিয়ট এডভান্সড ক্যাপাবিলিটি-৩ বা পিএসি -৩ মিসাইল । এটি একটি হিট টু কিল মিসাইল ইন্টারসেপ্টর। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা ট্যাকটিক্যাল ব্যালেস্টিক মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল এবং যুদ্ধবিমান প্রতিহত করতে সক্ষম এ মিসাইল ইন্টারসেপ্টর।

এছাড়া রয়েছে অটোনোমাস আন্ডারওয়াটার মিসাইল, টেকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম, লেজার গাইডেড বোমা, প্রিসিশন মিসাইল এবং মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম।

বিভিন্ন সংস্থার তালিকায় বর্তমান বিশ্বের মোস্ট এডভান্সড ফাইটর জেটের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে এফ-২২ র‌্যাপ্টর। যুক্তরাষ্ট্র এ বিমান অন্য কোনো দেশের কাছে বিক্রি করে না। লকহিড মার্টিনের সাথে এ বিমান নির্মাণে যুক্ত রয়েছে বোয়িং।

এফ-২২ একটি ফিফথ জেনারেশন স্টেলথ ফাইটার। এ বিমান প্রথম আকাশে ওড়ে ১৯৯৭ সালে। সার্ভিসে যুক্ত হয় ২০০৫ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মোট ১৯৫টি এ বিমান রয়েছে।

এফ-২২ এর ইঞ্জিন সংখ্যা ২টি। এর রয়েছে এয়ার টু এয়ার, এয়ার টু গ্রাউন্ড, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং সিগনাল ইন্টেলিজেন্স ক্যাপাবিলিটি। সুপারসনিক এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ১ হাজার ৫শ মাইল।

লহহিড মার্টিনের বহুল আলোচিত এফ-৩৫ ও বর্তমান বিশ্বের মোস্ট এডভান্সড ফাইটার জেট হিসেবে পরিচিত। এ বিমান ১২টি বি৬১ পারমানবিক বোমা বহনে সক্ষম। এটি একটি পঞ্চম প্রজম্নের বহুমুখী যুদ্ধবিমান। এফ-২২ এর মত এফ-৩৫ ও একটি স্টেলথ ফাইটার অর্থাৎ প্রতিপক্ষের রাডারকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এয়ার সুপেরিয়রিটি এবং স্ট্রাইক মিশন উভয় দক্ষতা রয়েছে এ বিমানের। এছাড়া রয়েছে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার, ইন্টেলিজেন্স, সাভির্লেন্স এবং রিকনিসেন্স ক্ষমতা।

সুপারসনিক এফ-৩৫ এয়ার টু এয়ার, এয়ার টু সারফেস এবং শক্তিশালী এন্টি শিপ মিসাইল ক্ষমতাসম্পন্ন। এফ-৩৫ বিমানের অপর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো হেলিকপ্টারের মত সম্পূর্ণ ভার্টিক্যাল উপায়ে উডডয়ন এবং অবতরণ করতে পারে। এমনিক পেছনেও চলতে সক্ষম এ বিমান। এফ-৩৫ ফাইটার জেট ৯ হাজার ২ শ কেজি ওজনের সমরাস্ত্র বহন করতে পরে। এফ-৩৫ প্রথম আকাশে ওড়ে ২০০৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর। প্রথম সার্ভিসে যুক্ত হয় ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র মেরিন কোর-এ।

লকহিড মার্টিন তৈরি করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৌশলগত সামরিক পরিবহন সি-৫ এম সুপার গ্যালাক্সি। এ পরিবহন বিমানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে দ্রুত ভারী সমরাস্ত্র এবং সৈন্য বহন করতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আর ভারী যুদ্ধবিমান হলো সি-৫ এম সুপার গ্যালাক্সি।

একই সাথে সি-৫ সুপার গ্যালাক্সি যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র সামরিক কৌশলগত এয়ারলিফটার। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র আর্মির যেসব গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো সি-৫ গ্যালাক্সি বিমান। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ৫০ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে এ বিমান। যুক্তরাষ্ট্র আর্মির অপরিহার্য অংশ এবং গৌরব সি-৫ গ্যালাক্সি।

১৯৬৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী এ বিমান ব্যবহার করে আসছে। এখন পর্যন্ত ১৩১টি এ বিমান নির্মাণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিমানের একমাত্র ব্যবহারকারী দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে অনেক ধরনের শক্তিশালী যুদ্ধবিমান বিক্রি করে। কিন্তু কয়েক প্রকার যুদ্ধবিমান রয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্র কারো কাছে বিক্রি করে না। এ ধরনের একটি বিমান হলো সি-৫ এম সুপার গ্যালাক্সি।

সি-৫ গ্যালাক্সি প্রথম আকাশে ওড়ে ১৯৬৮ সালে। সি-৫ গ্যালাক্সি প্রথম মিশন পরিচালনায় অংশ নেয় ১৯৭০ সালের ৬ জুলাই ভিয়েতনাম যুদ্ধে।

১৯৮৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ১৩১টি সি-৫ গ্যালাক্সি তৈরি করে। বিমানটি চার ইঞ্জিন বিশিষ্ট। বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে রয়েছে ২৮টি চাকা। ১ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড ওজন নিয়ে আকাশে পুন: জ্বালানি সংগ্রহ ছাড়া বিমানটি টানা ৫ হাজার ৫২৪ মাইল উড়তে পারে। আর পুন: জ্বালানি সংগ্রহের মাধ্যমে অনির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে সামরিক এ পরিবহন বিমান।

এভিয়েশন ইতিহাসে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় বিমান সি-১৩০ হারকিউলিস। এটি একটি ভারী সামরিক বিমান। সামরিক পরিবহন বিমান হিসেবে সারা বিশ্বে বেশি পরিচিত। তবে দীর্ঘ পাল্লার ভারী গানশিপ, এটাক বিমানসহ হারকিউলিস পরিবারে রয়েছে ৪০টির বেশি ভার্সন। এর রয়েছে অবিশ্বাস্য আর বিস্ময়কর ল্যান্ডিং এবং টেক অফ ক্ষমতা।

বিশ্বে সবেচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদনে রয়েছে লকহিড মার্টিনের হারকিউলিস পরিবারের সামরিক বিমান। বিশ্বে ৬৯টি দেশের সামরিক ও বেসামরিক শাখায় বর্তমানে যুক্ত রয়েছে হারকিউলিস পরিবারের বিভিন্ন ধরনের বিমান। বিশ্বের অনেক সামরিক বাহিনীর প্রধান পরিবহন বিমান সি-১৩০ হারকিউলিস।

বাংলাদেশের কাছে ৯টি হারকিউলিস পরিবারের সামরিক বিমান রয়েছে। এর মধ্যে আধুনিক ভার্সন সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস রয়েছে ৫টি। আর সি-১৩০ হারকিউলিস রয়েছে ৪টি।

সি-১৩০ হারকিউলিসের রয়েছে বিস্ময়কর অবতরণ এবং টেক অফ ক্ষমতা। মাটির রানওয়েতে অবতরণ এবং মাটির রানওয়ে থেকে টেক অফ করতে পারে হারকিউলিস পরিবারের ভারী সামরিক পরিবহন বিমান। শুধু মাটির রানওয়েতে নয়, সমুদ্র সৈকত এবং যে কোনো বড় খোলা মাঠে কোনো ঝুকি ছাড়া অবতরণ করতে সক্ষম হারকিউলিস পরিবারের দানবীয় আকৃতির বিমান।

হারকিউলিস পরিবারের সামরিক বিমানের ঝুলিতে রয়েছে অনেক বিশ্ব রেকর্ড। দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে সার্ভিসে নিযুক্ত সি-১৩০ হারকিউলিস। খুব কম বিমানের এ রেকর্ড রয়েছে। ২০০৭ সালে হারকিউলিস পঞ্চম বিমানে পরিণত হয় যা ৫০ বছর ধরে সার্ভিসে নিযুক্ত।

সি-১৩০ হারকিউলিস প্রথম আকাশে ওড়ে ১৯৫৪ সালের ২৩ আগস্ট। সি-১৩০ হারকিউলিসের রয়েছে ৪০টিরও বেশি ভার্সন। সামরিক ছাড়াও এর রয়েছে সিভিলিয়ান ভার্সন।

সৈন্য, প্যারাট্রুপারস, সামরকি সরঞ্জাম বহন ছাড়া সি- ১৩০ হারকিউলিস পরিবারের বিমানের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের এটাক বিমান।

গানশিপ ভার্সন, এটাক ভার্সন, এয়ারবর্ণ এসল্ট, মেরিটাইম পেট্রোল, এরিয়েল ফায়ারফাইটিং, এরিয়েল রিফুয়েলিং প্রভৃতি ভার্সনও রয়েছে সি-১৩০ হারকিউলিসের। এ ছাড়া এর রয়েছে যাত্রীবাহী ভার্সন লকহিড এল-১০০। ৬০টিরও বেশি দেশে রয়েছে যাত্রীবাহী এ ভার্সন। হারকিউলিস পরিবারের সব থেকে আধুনিক ভার্সনের নাম সুপার হারকিউলিস। পুরো নাম ‘লকহিড সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস।

২০১৯ সালে লকহিড মার্টিন ৫৩ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। ২০১৯ সালে লকহিড মার্টিনের রেভিনিউ ছিল ৫৯ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। সমরাস্ত্র ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাত, ন্যাশনাল এরোনটিকস এবং মহাকাশ সংস্থা নাসারও কাজ করে এ প্রতিষ্ঠান। লহহিড মার্টিন তার অধিকাংশ সমরাস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্র আর্মির কাছে।