বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইসলাম, মুসলিম ও অভিবাসন বিরোধী মনোভাব চরম আকার ধারণ করেছে। তারা এই মহাদেশের বাইরের লোকজনকে ভিন্ন চোখে দেখে থাকে। উগ্র জাতীয়তাবাদী ও কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থানের পর থেকে ইউরোপে ইসলাম, মুসলিম ও অভিবাসন বিরোধী মনোভাব হয়ে উঠেছে আরো তীব্র। ইউরোপের সমাজের কিছু অংশের মানুষের কাছে এই মনোভাব গ্রহনযোগ্যতাও পাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে তারা নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে। এজন্যই তারা অন্য সমাজের ও সম্প্রদায়ের জনগণকে তৃতীয় শ্রেনীর মানুষ হিসেবে দেখে। ‘সুপিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে’ ভোগাই এর মূল কারণ। এ ধরনের মনোভাব থেকে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ঘৃনামুলক প্রচারনা চালাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদপত্র। বিশ্লেষকরা এটাকে ইউরোপের নৈতিক দেউলিয়াত্ব ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বহিপ্রকাশ বলে মনে করছেন। ইউরোপের এই শ্রেষ্টত্ববাদের ধারনার বিপজ্জনক দিক নিয়ে থাকছে মোতালেব জামালীর প্রতিবেদন।
কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলো নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেও এখন এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সর্ম্পকে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বহু মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাতে মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলো পালন করতে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা। এই প্রথম পরস্পর বিরোধী দেশগুলো কাছাকাছি আসছে। এমনকি দশকের পর দশক ধরে ইরানের সাথে আরব দেশগুলোর যে বিরোধ তা কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইরানের সাথে বিশ্বশক্তির পারমানবিক চুক্তির বিরুদ্ধে ইসরাইল অবস্থান নিলেও আরব দেশগুলো অনেকটা নিরব। অপরদিকে ঘনিষ্ট হচ্ছে তুরস্ক, সৌদি আরব, মিশর ও কাতারের সাথে সর্ম্পক। সিরিয়ার সাথে আরব আমিরাত, কাতার ও তুরস্ক সর্ম্পক স্থাপনের ইঙ্গিত দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে দেশগুলোর পরিবর্তিত সর্ম্পকের নানা দিক থাকছে মুনতাসীর মুনীরের প্রতিবেদনে।
তুর্কি নেতা রিজেপ তাই্যয়েপ এরদোয়ানকে কোনোভাবেই বশে আনতে পারছে না পাশ্চাত্য। তুরস্কের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি পশ্চিমা দুনিয়াকে মাঝে মাঝেই বেকায়দায় ফেলে দেয়। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক মাসে এরদোয়ানের দুইবার বৈঠক নিয়ে পাশ্চাত্যের নেতারা নাখোশ। বিশেষ করে রাশিয়ার সোচিতে দুই নেতার চার ঘণ্টার বৈঠক পাশ্চাত্যকে উৎকণ্ঠায় ফেলেছে। বৃটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরের ভিত্তিতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে ইলিয়াস হোসেনের প্রতিবেদনে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফর নিয়ে নানা সমালোচনা ও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করে ক্ষমতায় এসেছিলেন বাইডেন। কিন্তু সেই বাইডেনকেও এখন সৌদি আরবের দ্বারস্থ হতে হলো। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতির মোকাবেলা করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্র দেশগুলোকে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু তেলের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে আসেননি বাইডেন। বরং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে বৈঠক করাই ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। কারণ, দেরিতে হলেও বাইডেন বুঝতে পেরেছেন যে, সৌদি আরব এখন আর এককভাবে আমেরিকার উপর নির্ভরশীল নয়। বরং যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতিতে চীন ও রাশিয়ার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে রিয়াদের। বিস্তারিত থাকছে হায়দার সাইফের প্রতিবেদনে।
মিশরের স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির নজিরবিহীন বর্বরতার মুখে বিশে^র সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামী সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। এ দলটি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা, সেই প্রশ্ন জাগছে অনেকের মনে। মিডল ইস্ট আইয়ে এক নিবন্ধে এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মুসলিম ব্রাদারহুড ও ইসলামী রাজনীতি বিষয়ক গবেষক এবং আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. এরিকা বিয়াগিনি। তার মতে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়ন সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবেই তারা অদম্য এবং বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতেও টিকে থাকতে সক্ষম। ইসলামপন্থী রাজনীতির ভবিষতের নানা দিক নিয়ে থাকছে আজকের প্রতিবেদন।