নাগর্নো-কারাবাখে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র লড়াই

- সংগৃহীত

  • মেহেদী হাসান
  • ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:০১

শত শত বছর ধরে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল আরব, পারস্য, রোমান, অটোমান এবং রাশান সাম্রাজ্যের অধীনে থাকার পর এবার সেখানে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। আর্মেনিয়ার হাত ধরে সর্বশেষ এই অঞ্চলে সামরিকভাবে প্রবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এর মূলে রয়েছে নাগর্নো-কারাবাখ। নাগর্নো-কারাবাখ হয়ে উঠতে যাচ্ছে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক এবং আধিপত্যবাদী প্রতিযোগিতার নতুন কেন্দ্র।

নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে শত বছর ধরে দ্বন্দ্ব আর সংঘাত চলছে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে। এই সংঘাতে অতীতে রাশিয়া সবসময় পাশে ছিল আর্মেনিয়ার। কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে রাশিয়া নাগর্নো-কারাবাখ ইস্যুতে আর্মেনিয়ার পক্ষত্যাগ করে। ফলে ৩০ বছর পর আবার নাগর্নো-কারাবাখ ফিরে পায় আজারবাইজান। জবাবে রাশিয়ার দীর্ঘকালের মিত্র আর্মেনিয়া মস্কোর হাত ছেড়ে ওয়াশিংটনের হাতে হাত রেখেছে। সম্প্রতি আর্মেনিয়ায় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-আর্মেনিয়া দুই দেশের দশদিনব্যাপী সামরিক মহড়া। এতে আর্মেনিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত ক্রেমলিন।

আর্মেনিয়াপন্থী বিদ্রোহীরা আজারবাইজানের ছয় নাগরিক হত্যার পর ১৯ সেপ্টেম্বর আজারবাইজান হামলা চালিয়েছে নাগর্নো-কারাবাখে আর্মেনিয়াপন্থী মিলিশিয়া বাহিনীর ওপর। একদিনের অভিযানে শেষ পর্যন্ত আজারবাইজানের সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে আর্মেনিয়াপন্থী বিদ্রোহীরা। ঘোষণা করা হয় যুদ্ধবিরতি। এর প্রতিবাদে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আর্মেনীয়রা। ফলে এই অঞ্চলে নতুন করে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। রাশিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই অভিযান আজারবাইজানের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

জর্জিয়া, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান পরিচিত দক্ষিণ ককেশাাস অঞ্চল হিসেবে। এর দক্ষিণ-পশ্চিমে ইরান ও তুরস্ক এবং উত্তরে রাশিয়া। অঞ্চলটির একদিকে কাস্পিয়ান সাগর এবং আরেক দিকে কৃষ্ণসাগর। ফলে ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ মানে ইরান এবং রাশিয়ার জন্য বড় ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ। আর এই কাজটিই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রকে করে দিচ্ছে আর্মেনিয়া।

জর্জিয়ার উত্তরে কৃষ্ণসাগরের তীরে গুরুত্বপূর্ণ আবখাজিয়া নিয়েও বিরোধ চলছে জর্জিয়া-রাশিয়ার মধ্যে। এই বিরোধে জর্জিয়ার পক্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আবখাজিয়াকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রায় সব সদস্য-দেশ এর বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ আবখাজিয়াকে জর্জিয়ার অংশ মনে করছে।

ককেশাস অঞ্চলে জর্জিয়ার পর এবার আজারবাইজান-আর্মেনিয়া ইস্যুতে প্রকাশ্যে এলো যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়াকে ক্ষেপিয়ে এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে ডেকে আনার জন্য আর্মেনিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপ আজারবাইজানের জন্য যেমন সুবিধা এনে দিয়েছে, তেমনি রয়েছে বড় ধরনের ঝুঁকি। সুবিধা হলো- রাশিয়া এবং তুরস্কের সহায়তায় গোটা নাগর্নো-কারাবাখের ওপর পূর্ণনিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে সক্ষম হবে আজারবাইজান। এছাড়া ইরান দীর্ঘদিন ধরে আর্মেনিয়ার পক্ষে ছিল। তেহরানও আর্মেনিয়ার পাশ থেকে সরে আসতে পারে। ভবিষ্যতে নাগর্নো-কারাবাখ হয়ে উঠতে পারে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আর্মেনিয়া আবার অগ্রসর হতে পারে নাগর্নো-কারাবাখ দখলের দিকে।

বিশ্লেষকদের মতে, নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে এবার রাশিয়ার প্রায়শ্চিত্তের পালা এসেছে। কারণ, বর্তমানে নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে আর্মেনিয়া আজারবাইজনের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে, তার মূলে রয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ১৯৯১ সাল-পরবর্তী রাশিয়ার ভূমিকা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর নাগর্নো-কারাবাখ অটোমানদের কাছ থেকে ব্রিটিশের অধীনে আসে। ব্রিটিশরা নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজানের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর আর্মেনিয়া, আজারবাইজান এবং জর্জিয়া দখলে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। কিন্তু এই তিনটি দেশের সঠিক কোনো সীমানা নির্ধারণে ব্যর্থ হয় সোভিয়েত শাসকরা। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এখানকার জনগোষ্ঠীকে।

নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের মধ্যে অবস্থিত হলেও আর্মেনিয়া একে তার দেশের অংশ হিসেবে দাবি করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন নাগর্নো-কারাবাখকে একটি অটোনোমাস এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেয়। এরপর দীর্ঘ কয়েক দশক সোভিয়েত ইউনিয়ন শক্তির জোরে সেখানে শান্তি ধরে রাখতে সক্ষম হলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের আগে থেকেই সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন।

নাগর্নো-কারাবাখের জাতিগত আর্মেনিয়ানরা ১৯৮৮ সালে অঞ্চলটিকে আর্মেনিয়ার সাথে যুক্ত করার পক্ষে অবস্থান নেয় এবং ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৮৮ সালে নাগর্নো-কারাবাখের অটোনোমাস মর্যাদা বাতিল করে সরাসরি মস্কোর শাসনের অধীনে নেয়।

১৯৯১ সালে নাগর্নো-কারাবাখের আর্মেনিয়ানরা স্বাধীনতা ঘোষণা করলে মস্কো নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলতে থাকে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পর স্বাধীনতা লাভ করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। একই বছর আর্মেনিয়া নাগর্নো-কারাবাখকে তাদের অংশ দাবি করে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের আগে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও আর্মেনিয়া ১৯৯১ সালে যখন নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তখন রাশিয়া আর্মেনিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। কেবল তাই নয়, আর্মেনিয়াকে সরাসরি অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে।

রাশিয়ার সহায়তায় তখন আর্মেনিয়া কেবল নাগর্নো-কারাবাখ নয়, বরং আজারবাইজানের ২০ ভাগ এলাকা দখল করে নেয়। এরপর নাগর্নো-কারাবাখসহ আশপাশের দখলীকৃত এলাকা আর্মেনিয়ার হাতে অর্পণ করেই রাশিয়ার মধ্যস্থাতায় তখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় পরাজিত আজারবাইজান। সেই থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নাগর্নো-কারাবাখ এবং তার আশপাশে আজারবাইজানের অনেক এলাকা রাশিয়ার সমর্থনে দখলে রাখা আর্মেনিয়া।

দীর্ঘ সময়ে আর্মেনিয়া নাগর্নো-কারাবাখের সমস্ত মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালায়। ১৯৮৮ সালে যেখানে নাগর্নো-কারাবাখে ২৩ ভাগ মুসলিম ছিল সেখানে ২০২০ সালে নাগর্নো-কারাবাখে কোনো মুসলিমের অস্তিত্ব ছিল না। ২০২০ সালে এলাকাটির অধিবাসীদের ৯৯ দশমিক ৭ ভাগ আর্মেনিয়ান খ্রিস্টান বসতি এলাকায় পরিণত হয়। অথচ, ১৮৩২ সালের জনশুমারী অনুসারে নাগর্নো-কারাবাখের ৯১ ভাগ মানুষ ছিল আজেরি মুসলিম। আর সেটি কমতে কমতে ২০২০ সালে নাগর্নো-কারাবাখ পরিণত হয় একটি শতভাগ আর্মেনীয় খ্রিস্টান এলাকায়।

নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে জাতিগত দ্বন্দ্ব, সংঘাত আর যুদ্ধ চলছে একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। শত শত বছর ধরে আর্মেনিয়া আজারবাইজান পারস্য, রোমান, অটোম্যান এবং রাশান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে শতবছরব্যাপী যুদ্ধের কেন্দ্রে রয়েছে নাগর্নো-কারাবাখ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে দেশ দুটির খ্রিস্টান এবং মুসলিম সম্প্রদায় বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত জাতিগত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। একে অপরের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা, বিদ্বেষ আর অবিশ্বাস বিরাজ করছে শত বছর ধরে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্মেনিয়ান গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে, যা অস্বীকার করছে বর্তমান তুরষ্ক। এরপর গত একশ বছর ধরে আর্মেনিয়ানরা রাশিয়া আর পশ্চিমাদের সহায়তায় নাগর্নো-কারাবাখে মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ আর গণহত্যা পরিচালনা করেছে।

নাগর্নো-কারাবাখের অবস্থান আজারবাইজানের অভ্যন্তরে। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে, নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে এটি স্বীকৃত। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পর আর্মেনিয়া শক্তি প্রয়োগ করে দখল করে নেয় নাগর্নো-কারাবাখ।

আর্মেনিয়ার দাবি, নাগর্নো-কারাবাখ একটি খ্রিস্টান-অধ্যুষিত এলাকা এবং সেখানে একটি প্রাচীণ খ্রিস্টান রাজ্য ছিল প্রাচীনকালে। তবে ইতিহাসবিদদের মতে আর্মেনিয়ার এই দাবি ভুল। বস্তুত নাগর্নো-কারাবাখ শত শত বছর ধরে পারস্য সাম্রাজ্য এবং অটোম্যানদের অধীনে ছিল। ৬৫১ সালে আরব মুসলিমরা পারস্য জয় করার পর দক্ষিণ ককেশাস মুসলিম শাসনের অধীনে আসে। রাশান সাম্রাজ্যের অধীনে আসার পরও সেখানে মুসলিমদের প্রশাসন বজায় ছিল। ১৮০৫ সালে নাগর্নো-কারাবাখ রাশান সাম্রাজ্যের অধীনে এলেও এখানে অনেকটা স্বাধীনভাবে রাজত্ব করতে থাকেন শাসক ইব্রাহীম।

১৮৭৭ সালে অটোমান-রুশ যুদ্ধে অটোমানরা হাতছাড়া করে নাগর্নো-কারাবাখসহ দক্ষিণ ককেশাসের অনেক এলাকা। এরপর আবার এলাকাটি অটোমানদের অধীনে এলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর এলাকাটি প্রথমে ব্রিটিশ এবং পরে রাশিয়ার অধীনে যায়। শত শত বছর ধরে এখানকার ৯০ ভাগের বেশি মানুষ ছিল ইসলাম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু মুসলিমদের হাতছাড়া হওয়ার পর খ্রিস্টানরা মুসলিমদের হত্যা ও উচ্ছেদের মাধ্যমে এক পর্যায়ে খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয় । ১৯২০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজানের অধীনে একটি অটোনোমাস অঞ্চলের মর্যাদা দেয় সোভিয়েত নেতারা। কিন্তু আর্মেনিয়া এতে রাজি ছিল না এবং তখন থেকে তারা এটি দখলের পরিকল্পনা করে। অবশেষে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তারা এটি দখলে নেয়।

আর্মেনিয়া নাগর্নো-কারাবাখ দখলের পর জাতিসংঘ থেকে তিনবার প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে আজারবাইজানের পক্ষে। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পাশকৃত প্রস্তাবে নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে অবিলম্বে আর্মেনিয়াকে সেখান থেকে বিনা শর্তে সমস্ত সেনা সরিয়ে আনার দাবি জানায়।

একই বছর থেকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানানো হয়েছে আর্মেনিয়াকে অবিলম্বে শর্তহীনভাবে নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর্মেনিয়ার গণহত্যা, জাতিগত নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিবৃতি দেওয়া ছাড়া বাস্তবে কোনো ভূমিকা পালন করেনি। আর্মেনিয়ার অত্যাচারের কারণে নাগর্নো-কারাবাখের ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নেয় আজারবাইজানে উদ্বাস্তু হিসেবে।

২০২০ সালের ৯ অক্টোবর ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নাগর্নো-কারাবাখ এবং তার আশপাশের আর্মেনিয়ার দখলীকৃত এলাকায় ৮ লাখ জাতিগত আজারবাইজানিদের নিধন করা হয়েছে। এছাড়া ২ লাখ আজেরিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের বসতভিটা থেকে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৯১ সালে আর্মেনিয়া নাগর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া সেখানে তারা ধ্বংস করে ইসলাম ও মুসলিমদের প্রায় সব চিহ্ন।

অবশেষে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আজারবাইজান তুরস্কের সহায়তায় অভিযান চালায় নাগর্নো-কারাবাখে। ৪৪ দিনের যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে আর্মেনিয়া। ৩০ বছর পর আজারবাইজান ফিরে পায় নাগর্নো-কারাবাখ। কিন্তু গত তিন বছর ধরে এলাকাটি ঘিরে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ চলে আসছে।

সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর আজারবাইজান বড় পরিসরে হামলা চালায় কারাবাখে আর্মেনিয়ানপন্থী মিলিশিয়া বাহিনীর ওপর। আজারবাইজানের অভিযোগ, কারাবাখে মিলিশিয়া বাহিনীকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে আর্মেনিয়া এবং তারা আজারবাইজানের বিরুদ্ধে হামলা পরিচালনা করছে। নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে সৈন্য এবং অস্ত্র জড়ো করেছে আর্মেনিয়া। কারাবাখে আর্মেনিয়ানপন্থী মিলিশিয়া বাহিনীর বোমা হামলায় নিহত হন আজারবাইজানের ৪ পুলিশ কর্মকর্তা। এ হামলার পরপরই আজারবাইজান সেখানে হামলা শুরু করে। আজারবাইজানের হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার ইউরোপিয়ান মিত্ররা।