আন্দালুসিয়ায় হারিয়ে যাওয়া দিন

তারেকের সেনা ছিলো সাত হাজার। আর মুসা বিন নুসাই’র ছিলো আরো পাঁচ হাজার। অন্যদিকে রডেরিকের সেনাসংখ্যা লাখেরও বেশি। স্বাভাবিক হিসাবে সবকিছু গড়বড়ে হয়ে যাওয়ার কথা - ইন্টারনেট

  • শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ
  • ২৫ জুন ২০২০, ১৩:৪৭

ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকাকে ভাগ করেছে জিব্রালটার প্রণালী। সরু এই প্রণালীর একদিকে আটলান্টিক, অন্যদিকে ভূমধ্যসাগর। আর ইউরোপের ভ’খন্ডে আইবেরিয় উপদ্বীপ। তিনদিকে সাগরবেষ্টিত এই উপদ্বীপটিই আন্দালুসিয়া। স্পেনের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল।

সাগর, পাহাড় আর প্রাচীন ঐতিহ্য মিলিয়েই ওই অঞ্চল। আন্দালুসিয়ার ভ’মিতে ছড়ানো সুন্দর, সভ্যতার চিহ্ন। ইতিহাসের ভাঁজে আছে গৌরব. হারানোর হাহাকার।

হারানোর ইতিহাস নির্মম, ধর্মীয় জিঘাংসায় গণহত্যার। সেইসব ইতিহাসের কিছু চিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। আর কিছু ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে আন্দালুসিয়ার বাতাসে।

উপদ্বীপের বাতাস এখনো কাঁদে। কেউ কান্নার শব্দ শুনতে পান, কারো কান বধির।

ইতিহাস বলে, ওখানে আইবেরিয় এবং কেল্টদের বসতি ছিলো। রোমানদের সঙ্গে এদের লড়াই হয়। পরে চলে যায় রোমান সাম্রাজ্যে। মধ্যযুগে যায় জার্মান যাযাবরদের শাসনে। এদের ডাকা হতো ভিসিগোথ। এরা প্রথম দিকে আরিয়ান খৃস্টান ছিলো। ৫৮৯ সালে ভিসিগোথ সম্রাট ক্যাথলিক ধর্ম গ্রহণ করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সেই সুযোগ নেন পাশের সামন্ত রাজা রডারিক। কোনেন সিস গোত্রের সহযোগিতায় ভিসিগোথ সম্রাট উইটিযাকে পরাজিত করে তিনি সিংহাসনে বসেন। উইটিযাকে হত্যা করেন নির্মমভাবে।

সিংহাসনে বসে পাশের ছোট রাজ্যগুলোর দিকে চোখ দিলেন রডারিক। সিউটা আক্রমণ করেন। সিউটার রাজা কাউন্ট জুলিয়ন ছিলেন উইটিযার মেয়ের জামাই। তিনিও পরাজিত হন রডারিকের কাছে। জুলিয়ন প্রথমে পালিয়ে যান। তবে ফিরে এসে রডারিকের অনুগত হন।

তখনকার সময় আনুগত্য স্বীকার করলে নিজের সন্তানকে কেন্দ্রে পাঠাতে হতো। এর কারণ ছিলো দু’টি। এক. আনুগত শাসক যেন কেন্দ্রীয় শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে না পারে। দুই. কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার সঙ্গে অঙ্গরাজ্যগুলোর সামঞ্জস্য রাখতে কেন্দ্রের নিয়ম-কানুন শেখা।

কাউন্ট জুলিয়নের কোনো পুত্রসন্তান ছিলো না। তিনি তার কন্যা ফ্লোরিন্ডাকে তখনকার রাজধানী তলেডোতে পাঠিয়ে দেন। বিনিময়ে রডারিক জুলিয়নকে সিউটা ও আলজি সিরাসের গভর্নর বানান।

ফ্লোরিন্ডা ছিলেন সুন্দরি। সম্রাটট রডারিক তাকে ধর্ষণ করেন। ফ্লোরিন্ডা তার বাবাকে বিষয়টি জানিয়ে গোপনে চিঠি লিখেন। কিছুদিনের ছুটির কথা বলে বাবা কন্যাকে নিজের কাছে নিয়ে যান।

পরে বাবা যোগাযোগ করেন উত্তর আফ্রিকার মুসলিম গভর্নর মুসা ইবনে নুসাইর সঙ্গে। তাকে আমন্ত্রণ জানান স্পেন আক্রমণের। মুসা চিঠি লিখেন তার খলিফার কাছে। খলিফা প্রথম ওয়ালিদ প্রথমে পরীক্ষামূলক অভিযান চালানোর অনুমতি দেন। সফল হলে চ’ড়ান্ত অভিযান চালাতে বলেন। মুসা ৪০০ পদাতিক ও ১০০ অশ্বারোহিসহ প্রথমবার অভিযান পাঠান। এটি সফল হয়। পরে তিনি তার সিপাহ সালার তারেক বিন জিয়াদকে ৭০০০ পদাতিক বাহিনী দিয়ে অভিযানে পাঠান।

এই তারেক বিন জিয়াদ-ই ছিলেন মুসলমানদের স্পেন বিজয়ের নায়ক।

ওখানে পৌঁছেই তারেক নিজেদের সব নৌযান পুড়িয়ে দেন। সেনারা হতবাক হয়। তারেক জবাব দেন, ‘আমরা ফিরে যেতে আসিনি। হয় বিজয় হবে, নয় মৃত্যু।’- ইন্টারনেট
ওখানে পৌঁছেই তারেক নিজেদের সব নৌযান পুড়িয়ে দেন। সেনারা হতবাক হয়। তারেক জবাব দেন, ‘আমরা ফিরে যেতে আসিনি। হয় বিজয় হবে, নয় মৃত্যু।’- ইন্টারনেট

 

অগ্রসর হন তারেক। তার সেনাদের গোপনে জিব্রাল্টার পার করিয়ে দেন জুলিয়ন। ৭১১ সালের ২৯ এপ্রিল স্পেনের সীমানায় একটি পাহাড়ের কাছে সেনাসমাবেশ করেন তিনি। পরে তার নামেই ওই পাহাড়ের নাম রাখা হয় ‘জাবাল উত তারেক’। এর অর্থ ‘তারেকের পাহাড়’। এখন সেই নাম হয়েছে ‘জিব্রালটার’।

ওখানে পৌঁছেই তিনি নিজেদের সব নৌযান পুড়িয়ে দেন। সেনারা হতবাক হয়। তারেক জবাব দেন, ‘আমরা ফিরে যেতে আসিনি। হয় বিজয় হবে, নয় মৃত্যু।’

তারেকের সেনা ছিলো সাত হাজার। আর মুসা বিন নুসাই’র ছিলো আরো পাঁচ হাজার। অন্যদিকে রডেরিকের সেনাসংখ্যা লাখেরও বেশি। স্বাভাবিক হিসাবে সবকিছু গড়বড়ে হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু হলো না।

তারেকের কাছে ছিলো বিশ্বাসের জোর। তিনি সেনাদের জরো করলেন। ভাষণ দিলেন, ‘আমার সৈন্যরা, কোথায় পালাবে তোমরা? পেছনে সাগর, সামনে শত্রু। তোমাদের কাছে আছে কেবল দৃঢ়তা এবং সাহস। মনে রেখো, অর্থলোভী মালিকরা যেসব এতিমদের বিক্রি করে দেয়, এই দেশে তোমরা তাদের চাইতেও দুর্ভাগা। তোমাদের সামনে অগণিত শত্রু। কিন্তু তোমাদের হাতে কেবল তলোয়ার। যদি শত্রুর হাত থেকে নিজেদের জীবন ছিনিয়ে আনতে পারো, তবে বাঁচতে পারবে। তোমাদের সামনে আছে শত্রুকে পরাজিত করে জয় ছিনিয়ে আনার সুবর্ণ সুযোগ। যদি মৃত্যুকে তুচ্ছ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো, জয় নিশ্চিত। ভেবো না, আমি তোমাদেরকে বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে যাবো। আমি সবার সামনে থাকব এবং আমার বাঁচার সম্ভাবনাই সবচেয়ে কম।’

ভাষণ শেষে ১২ হাজার সেনাকে ভাগ করে কয়েকটি এলাকায় পাঠিয়ে দেন তারেক। তিনি থাকেন মূল দলের সঙ্গে।
৭১১ সালের ১৯ জুলাই রডেরিক পরাজিত হন তারেকের কাছে। ওই এলাকাটি হয়ে যায় মুসলমানদের। খবর পেয়ে চলে আসেন মুসা বিন নুসাইর। পরে আইবেরিয়ান উপদ্বীপের অধিকাংশ এলাকা জয় করে নেন তারেক।

এই বিজয় টিকে ছিলো প্রায় সাড়ে সাতশ বছর। আর তারেক বিন জিয়াদের নাম ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে গেলো সোনার অক্ষরে। সেই সময় ওই এলাকাটির নাম রাখা হয় আন্দালুসিয়া। আন্দালুসিয়া হওয়ার পর এলাকাটি দ্রুত উন্নত হতে থাকে। সমৃদ্ধ হতে থাকে শিল্প ও সংস্কৃতিতে। অথচ ইউরোপজুড়ে তখন ছিলো মূর্খতা। মুসলমানরা আন্দালুসিয়ায় তৈরি করেন বড় লাইব্রেরি। যাতে বই ছিলো ৬০ হাজার। পৃথিবীর জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রভ’মিতে পরিনত হয় আন্দালুসিয়া।
শুরু থেকেই গা জ্বলতে থাকে খৃস্টান শাসকদের। এরা জল ঘোলা করতে থাকে। আরগুনের শাসক ফারডিনান্ড এবং কাস্তালিয়ার পুর্তগীজ রানি ইসাবেলা বিয়ে করে নিজেদের শক্তি বাড়ান।

১৪৮৩ সালে আবু আব্দুল্লাহ বে আব্দিল লুসান আন্দালুসিয়া আক্রমণ করেন। শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। এতে মুসলমানদের শক্তি কমতে থাকে।

ফার্ডিনান্ড ও ইসাবেলা সেই সুযোগটা নেন। এরা নিজেদের প্রভাব বাড়াতে থাকেন। অন্যদিকে মুসলমানরা লড়াই চালিয়ে যায়।

খৃস্টান দম্পতি মুসলমানদেরকে উৎকোচ দিয়ে ধর্মান্তরিত করার কৌশল নেন। কিছু লোক উৎকোচ নিলেন। কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার ভান করলেন। গোপনে তারা মুসলমান ধর্মের অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ব্যাপারটা টের পেলেন ফার্ডিনান্ড। এবার জোর খাটাতে শুরু করলেন। যারা খৃস্টান হতে চাইতেন না, তাদের মেরে ফেলা হতে থাকলো। যারা খৃস্টানের ভান করতেন, তাদেরকে বলা হতো ‘মারিস্কো’। এই মারিস্কোদের বাড়িতে নজরদারি করা হতো।

একটা সময় ফার্ডিনান্ড ও ইসাবেলা গ্রানাডা অবরোধ করেন। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারেননি। শহরের দরজা আটকানো ছিলো। খৃস্টানরা ঘোষণা দেয়, ৩ দিনের মধ্যে আন্দালুসিয়া ছেড়ে যেতে হবে। কোনো মুসলমান যদি জাহাজে উঠে তাহলে তাদেরকে মুসলিম দেশগুলোতে পেঁছে দেওয়া হবে। অন্যদিকে মুসলমানদেরকে বলে মসজিদের দরজা খুলে দিতে। এবং সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিতে। যারা মসজিদে আশ্রয় নেবেন এবং জাহাজে উঠবেন, তাদের কোনো ভয় নেই।

খৃস্টান রাজা সাগরে জাহাজগুলো ডুবিয়ে দেয়। মসজিদের ভেতর মুসলমানদের রেখে বাইরে থেকে তালা আটকে মসজিদে আগুন দেয়। যারা বেঁচে ছিলেন, তারা পালিয়ে যান উত্তর আফ্রিকায়।

আন্দালুসিয়া থেকে হারিয়ে যায় মুসলমান। ধ্বংশ করা হয় মুসলিম সভ্যতার অনেক কিছুই। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় লাইব্রেরি। নষ্ট করা হয় স্থাপত্য। যতটুকু টিকে আছে, সেগুলো দেখার জন্য দলে দলে পর্যটক ছুটে যায় স্পেনের আন্দালুসিয়ায়।

শুধু প্রাচীন ঐতিহ্য নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যওে ভরপুর ওই উপদ্বীপ। ওখানে আছে ইউরোপের দ্বিতীয় উঁচু পর্বতশ্রেণি। বিশাল জলাভূমি।

গোটা আন্দালুসিয়ায় ঐতিহ্য আর প্রকৃতি একসঙ্গে থাকে। কর্ডোবায় আছে প্রাচীন দুর্গ, মনোরম বাগান। গ্রানাডার পশ্চিমে সাবিক পাহাড়ে মুসলিম সংস্কৃতির উত্তরাধিকার আল হামরা প্রাসাদ। মধ্যযুগীয় স্থাপত্যটিতে আছে জটিল কারুকাজ। মুগ্ধ করার মতো সাজ। খোলা আঙিনা, ঝর্ণা। চারদিকে ঘন সবুজ বন। মাঝখানে প্রাসাদ। এ কারণে আল হামরাকে বলা হয় ‘পান্নায় খচিত মুক্তা’।

আজ যেখানে আলহামরা, নবম শতাব্দীতে সেখানে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত এক রোমান দুর্গ - ইন্টারনেট
আজ যেখানে আলহামরা, নবম শতাব্দীতে সেখানে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত এক রোমান দুর্গ - ইন্টারনেট

 

প্রাসাদের বাঁ দিক দিয়ে বয়ে গেছে দারো নদী। আল হামরা থেকে চোখ দিলে দেখা যায় আল বাইজিনের ঢালু তৃণভ’মি। পুরো গ্রানাডা শহর।

আজ যেখানে আলহামরা, নবম শতাব্দীতে সেখানে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত এক রোমান দুর্গ। ৮৮৯ সালে সাওয়ার ইবন হামদুন সেখানে আশ্রয় নেন। আলহামরা আর দশটা দুর্গের মতোই ছিল। এ কারণেই হয়তো এর নাম রাখা হয়েছে ‘আল হামরা’। আরবি ভাষার এই শব্দের অর্থ দাঁড়ায় ‘লাল দুর্গ’। তবে নামের ব্যাপারে আরো দুইটি মত প্রচলিত আছে। এই স্থাপত্যটি মূলত জৌলুস পেয়েছে নাসিরিদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ আল হামারের সময়। তার নামেও প্রাসাদের নাম হতে পারে। আবার নাসিরিদ রাজবংশকে ‘বনু আল হামার’ বলেও ডাকা হতো। আল হামরা নামটি সেখান থেকেও আসতে পারে।

সুলতান প্রথম ইউসুফ ও পঞ্চম মুহাম্মদের সময় এসে আজকের আল হামরার কাঠামো গড়ে উঠে। এরা এসে প্রাসাদ ও শহর বড় করেন। ভেতরটা সাজান জমকালো করে।

১৯৪২ সালে গ্রানাডার পতনের পর রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রানী ইসাবেলার দখলে যায় আল হামরা। এরা কিছু কাজ চুনকাম করে ঢেকে দেয়। প্রাসাদটিতে বসানো হয় রাজসভা।

পরে রাজা চার্লস এসে আল হামরার শীতকালীন প্রাসাদের অনেকটা অংশ ভেঙে নিজের দুর্গ বানান। ১৮১২ সালে ফরাসিরা ধ্বংশ করে দেয় টাওয়ার। ১৮২১ সালের ভ’মিকম্পেও আল হামরার ক্ষতি হয়। যেটুকু টিকে আছে, সেটুকুই ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষিত।

আন্দালুসিয়ায় উপক’লে আছে আরো এক প্রাচীন শহর ‘কাদিজ’। প্রত্নতাত্ত্বিকরা ওখানে তিন হাজার বছরেরও আগেকার বসতির প্রমাণ পেয়েছেন।

কাদিজে ছিলো রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের প্রথম পাবলিক অফিস। লর্ড বায়রন এখানে ছুটি কাটাতে আসতেন। এখনো সেসব চিহ্ন আছে। একটি রোমান ক্যাথলিক সিথেড্রালে আছে সোনার গম্বুজ। ১৭৭২ থেকে ১৮৩৮ সালের মধ্যে এটি বানানো হয়েছে। সিথেড্রালের টাওয়ার থেকে গোটা শহর দেখা যায়। সাগরের দিকে চোখ দিলে আসে উপক’লের দুর্দান্ত দৃশ্য।

আন্দালুসিয়ার তিন দিকেই সৈকত। ওসব সৈকতের পড়ন্ত দুপুর মানেই রোদগোসল। সৈকতে আরামের জন্য পর্যটকরা যান হুয়েলভা এলাকার দে লা লুজ শহরে। ওখানে আছে কিছু প্রত্যন্ত সৈকত। সাগরের বেপরোয়া বাতাসের বিপরীতে আছে পাইন গাছ। গ্রীষ্মে নির্জন সময় কাটাতে স্প্যনীশরা যান হুয়েলভায়।

দুর্বোধ্য সৈকত নেরজা বাড়াবাড়িরকমের সুন্দর। এই ‘সুন্দর’ থাকে মৌসুমের বাইরেও। এমনকি গ্রীষ্মেও সৈকত এলাকাটি থাকে শীতের মতো শান্ত।

আন্দালুসিয়ায় বড় পর্যটন গন্তব্য ন্যাশনাল পার্ক। ২ হাজার ৪৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জলাভূমিতে আছে বৈচিত্র। এটিও ইউনেস্কোর সংরক্ষিত এলাকা। মৌসুম হলে এখানে অতিথি পাখি যায়। এই পার্কে আছে বড় পাওয়ালা পাখি। যাকে ডাকা হয় হ্যালিনুল পাখি। ওদের গায়ে ছিট ছিট দাগ থাকে। ওই পার্কে আরো থাকে স্পট ফ্ল্যামিঙ্গস। বিরল আইবেরিয়ান ঈগলও দেখা যায় বনে। আছে স্প্যানিশ লাল হরিণ। বিরল কচ্ছপ। তী² দৃষ্টির বনবিড়াল।

পাহাড় দেখতে হলে যেতে হবে রন্ডায়। শহরটি বিখ্যাত। আন্দালুসিয়ার এই সাদা শহরটি কাদিজ এবং মালাগায়। পাহাড়ের ওপর সাদা রঙের ঘর। ঘরের ওপর বাদামি বা লাল রঙের টাইলস।

বাড়ির জানালা খুলে দিলে নিচে দেখা যাবে গিরিখাদ। সেরা ছবি পেতে পাহাড় ধরে লস মোলিনোস বরাবর খাদে নামতে হয়। এর পর দেখা যায় ফুলে ঢাকা আসল সুন্দর। বসন্ত এলে ওই এলাকায় ফুলের চাদর গজায়, তৈরি হয় অপরাজেয় সুন্দর।

প্রতিবেদনটির ভিডিও দেখুন

বিডিভিউজ-এ প্রকাশিত লেখার স্বত্ব সংরক্ষিত। তবে শিক্ষা এবং গবেষণার কাজে সূত্র উল্লেখ করে ব্যবহার করা যাবে