বাইতুল মুকাদ্দাস নিয়ে কী ভাবছে ইসরাইল

সোনালি গম্বুজের এই মসজিদটিকে অনেকেই আল আকসা ভেবে ভুল করেন। একে মুসলমানরা ডাকে ‘কুব্বাতুস সাখরাহ’ নামে। অন্যরা ডাকে ‘ডোম অব দ্য রক’ নামে - সংগ্রহ

  • সাইমা আকন্দ
  • ১০ মে ২০২০, ০২:৪৭

প্রাচীন শহর জেরুজালেম। এই শহরকে সামনে রেখে পই পই করে বলে দেওয়া যায় পৃথিবীর ইতিহাস। এর এক নাম ‘ইতিহাসের পাঠশালা’। অন্য নাম ‘শান্তির শহর’। জুদিয়া পাহাড়ের মালভ’মিতে ভ’মধ্যসাগর আর মৃত সাগরের মাঝে এই শহরের অবস্থান।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে গোটা পৃথিবী যখন সঙ্কটে, তখন ইতিহাসের হৃদয় জেরুজালেমও এর বাইরে নয়। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সঙ্ঘাতে যে শহরটি প্রতিদিন থাকে উত্তপ্ত, সেই শহরে এখন নেই কোলাহল।

পৃথিবীর রাজনীতি যখন থমকে গেছে, তখন অনেকটাই কমে গেছে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত। তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই ইসরাইল। করোনার সঙ্কটের মধ্যেও ইসরাইলি নির্যাতনের খবর আসছে সংবাদমাধ্যমে। ফিলিস্তিনীদের জন্য তৈরি করা করোনা হাসপাতাল গুড়িয়ে দেওয়ার মতো নির্মম সংবাদও জেনেছে বিশ্ব।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ব্যস্ত রয়েছে করোনা মোকাবেলায়। গাজা উপত্যকায় ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপ সামলাতে হচ্ছে এই দলটিকে।

এই যখন অবস্থা, তখন অভিযোগ রয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেপরোয়া আচরণ করছে ইসরাইল। নিরাপত্তার অজুহাতে দখলকৃত ভূমিতে ফিলিস্তিনীদের ওপর আরোপ করছে কড়াকড়ি। বিশেষ করে বাইতুল মুকাদ্দাস এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। প্রশ্ন উঠেছে, করোনা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে নতুন কোনো চাল দিচ্ছে না তো ইসরাইল!

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সঙ্ঘাত বসতি স্থাপন নিয়ে। সেই সঙ্গে রয়েছে মসজিদে আল আকসা এবং পবিত্র বাইতুল মোকাদ্দাস কমপাউন্ড নিয়ে বিবাদ। ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে এই কমপাউন্ডটি নিয়ে ঘটে গেছে অনেক কিছু। এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেঁধেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। হযরত ওমর (রা.)-এর সময় বাইতুল মোকাদ্দাস কম্পাউন্ড আসে মুসলমাদরে অধীনে। ওমরের জেরুজালেম অভিযানের সেই কাহিনীটি বিখ্যাত। তিনি জেরুজালেমে খৃস্টানদের সঙ্গে সন্ধি করেছিলেন। শর্ত দিয়েছিলেন তিন দিনের মধ্যে সকল রোমান নাগরিক বায়তুল মুকাদ্দাস ছেড়ে চলে যাবে। মিরাজের রাতে রাসুল (সা.) যেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন, সেই দরজা দিয়েই প্রবেশ করলেন ওমর (রা.)।

 পাখির চোখে পুরো কম্পাউন্ড। এর একদিকে সোনালি গম্বুজের মসজিদ। অন্যদিকে ‘আল আকসা’। বাইরের দিকে ইহুদিদের প্রার্থনার স্থান ‘পশ্চিমের দেওয়াল’

পাখির চোখে পুরো কম্পাউন্ড। এর একদিকে সোনালি গম্বুজের মসজিদ। অন্যদিকে ‘আল আকসা’। বাইরের দিকে ইহুদিদের প্রার্থনার স্থান ‘পশ্চিমের দেওয়াল’

 

নামাজের সময় হলে খৃস্টানরা অনুরোধ করলেন চার্চেই নামাজ পড়ে নিতে। কিন্তু হযরত উমর (রা.) এতে রাজি হননি। তিনি জানালেন, চার্চের ভেতরে নামাজ পড়ে তিনি উদাহরণ তৈরি করতে চান না। এমন উদাহরণ তৈরি হলে ভবিষ্যতে কোনো মুসলমান চার্চটি ভেঙে মসজিদ বানিয়ে ফেলতে পারে। তাই তিনি চার্চ থেকে বের হয়ে নামাজ আদায় করলেন। পরে সেখানে একটি মসজিদ বানানো হয়। এর নাম দেওয়া হয় ‘মসজিদে উমার’।

১০৯৯ সালে পবিত্র ভূমি চলে যায় ক্রুসেডারদের কাছে। মসজিদটি দখল করে এর ভেতরে পরিবর্তন করে খৃস্টানরা। এর একটি অংশকে গির্জা বানানো হয়। অন্য অংশকে বানানো হয় ঘোড়ার আস্তাবল। পরে দীর্ঘ সংগ্রামের পর সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী বাইতুল মুকাদ্দাসকে আবার মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে আনেন। সেই থেকে এর অধিকার মুসলিমদের। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে এই পবিত্র স্থান দখলের ষড়যন্ত্র চালু রাখে ইহুদি-খৃস্টানরা। এর ধারাবাহিকতায় আরব বিশ্বের সঙ্গে যুদ্ধ হয় ইসরাইলের। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের সময় ডোম অফ দ্য রকের মাথায় ইসরায়েলের পতাকা ওড়ানো হয়। পরে সেই পতাকা নামিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় ইসরাইল। তবে এই যুদ্ধে আরবরা পরাজিত হয়। পবিত্র ভ’মির কিছু অংশ চলে যায় ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পবিত্র ভ’মির দায়িত্ব দেয় মুসলিম সংগঠন ওয়াকফের হাতে। এখনো ওয়াকফের হাতেই এর অধিকার রয়েছে। তবে কম্পাউন্ডটি নিয়ে ইহুদি রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র থেমে নেই।

বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে তারা এই কম্পাউন্ডের দরজা বন্ধ করে দেয়। এতে মোট সতেরটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি স্থায়ীভাবে বন্ধ। আর বাকি এগারটির মধ্যে একটি ইহুদিদের জন্য খোলা। আর ১০টি মুসলিমদের জন্য। কম্পাউন্ডের ভেতরে অনেকগুলো স্থাপনা। মুসলিমদের কাছে পুরো কম্পাউন্ড এলাকাই বাইতুল মুকাদ্দাস। পুরোটাই পবিত্র ভ’মি। এই পবিত্র এলাকার ভেতর রয়েছে কয়েকটি মসজিদ। কয়েকটি স্কুল, মাদরাসা এবং মুসলিমদের বসতি। যখন ইহুদিরা বাইরের ফটকগুলোতে কড়াকড়ি আরোপ করে, তখন কেবল ভেতরের বসতির লোকেরাই পবিত্র ভ’মিতে নামাজ আদায় করতে পারেন।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে এখন আল আকসা পুরোপুরি বন্ধ। গত ২২ মার্চ থেকে মসজিদ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রমজান মাসেও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিল। রমজানে তারাবির নামাজ বন্ধ থাকলেও মসজিদের ভেতর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান দেওয়া হচ্ছে। তবে কম্পাউন্ডের বাইরে থেকে মুসলমানরা নামাজ আদায় করতে ভেতরে আসছেন না।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে জেরুজালেমে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ইসরাইল। কম্পাউন্ডের ফটকগুলোতে বাড়িয়েছে তল্লাশির বাড়াবাড়ি। আর এতেই সন্দেহ তৈরি হচ্ছে ফিলিস্তিনীদের।

এর আগেও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অজুহাতে কম্পাউন্ডের ভেতর মুসলমানদের প্রবেশ করতে না দেওয়া এবং সেখানে ইহুদিদের আধিপত্য তৈরি করার চেষ্টা চালিয়েছে ইসরাইল। তবে চাপের মুখে অবস্থান থেকে সরে যেতে বাধ্য হয় দেশটি।

করোনার প্রকোপে ফিলিস্তিনীরা যেখানে ঘরবন্দি। সেই সুযোগে বাইরে থেকে ইসরাইল কোনো চাল চালছে কি না সে ব্যাপারেও সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকরা। গত ২৭ এপ্রিল মসজিদ আল আকসার ইমাম শাইখ ইকরিমা সাবরির বাড়িতে ইসরাইলি সেনারা হানা দেয়। এই ঘটনায় মুসলমানদের শঙ্কা আরো জোড়ালো হয়ে উঠেছে। তার বাড়িতে ইসরাইলি সেনারা প্রবেশ করে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইমাম।

তিনি জানান, আল আকসা মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি দেওয়া নিয়ে তিনি কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন। এতে ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাড়িতে হানা দেওয়া হয়।

মূলত ইসরাইলে আমেরিকার দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে আনার ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় নতুন করে অস্থিরতা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে নেওয়ার ব্যাপারে গুয়ার্তুমি করেন। ২০১৮ সালে তেলআবিব থেকে দূতাবাসটি জেরুজালেমে সরিয়ে আনেন ট্রাম্প। দূতাবাস উদ্বোধনের দিন ইসরাইলি স্নাইপারের গুলিতে ৫৮ জন ফিলিস্তিনীর মৃত্যু হয়। ট্রাম্পের এই আচরণের বিরোধীতা করে সেচতন বিশ্ব। একে মধ্যপ্রাচ্যেকে নতুন করে অশান্ত করার পায়তারা হিসেবে দেখা হয়। তাদের বক্তব্য- জেরুজালেমের সার্বভৌমত্ব-বিতর্কের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই শহরকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া অন্যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমে ইসরাইলের তৈরি ডজন ডজন অবৈধ ইহুদি বসতিকে স্বীকৃতি দিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের যে কোনো ষড়যন্ত্রের পেছনেই ট্রাম্পকে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে।

পবিত্র শহর জেরুজালেম নিয়ে ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। মুসলমানদের কাছে এই ভ’মি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ইহুদিদের কাছেও পবিত্র। আর খৃস্টানদের নবী যিশু বা ইসা (আ.)-এর জন্ম এই শহরেই।

জেরুজালেম মানেই পৃথিবীর জন্য পবিত্র ভূমি। মানচিত্রে এই পবিত্র ভূমিতে ভেসে উঠে একটি সোনালি গম্বুজ। সোনালি গম্বুজের এই মসজিদটিকে অনেকেই আল আকসা ভেবে ভুল করেন। আবার অনেকের ধারণা মসজিদুল আকসাই হলো বাইতুল মুকাদ্দাস। মূলত বাইতুল মোকাদ্দাস বলা হয় পুরো কম্পাউন্ডটিকে। এর মধ্যে সোনালী গম্বুজের ওই মসজিদটির আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। ইহুদিরা মনে করেন এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন হযরত সুলাইমান (আ.)। পরে বিভিন্ন সময় এর কাঠামো ধ্বংস হয়। নতুন করে বানানো হয়। যখন যাদের অধীনে ছিলো, তারা এর নির্মাণ কাজে অংশ নেন। তবে প্রথমবার উপাসনালয়টি ধ্বংস হওয়ার পর আরেকটি কাঠামো নির্মাণ করা হয়। ওই উপাসনালয় আগে যে বিশাল এলাকাজুড়ে ছিলো এর সবটাকেই ধরা হয় বাইতুল মুকাদ্দাস হিসেবে। তাই বাইতুল মুকাদ্দাস বলতে কোনো নির্দিষ্ট স্থাপনাকে বোঝায় না।

সোনালী গম্বুজের ওই মসজিদটিকে মুসলমানরা ডাকে ‘কুব্বাতুস সাখরাহ’ নামে। ইহুদি ও খৃস্টানরা ডাকে ‘ডোম অব দ্য রক নামে’। অর্থাৎ পাথরের গম্বুজ। এখানেই রয়েছে সেই পাথর, যার ওপর ভর দিয়ে হযরত মোহাম্মদ (সা.) উর্ধ্বে আরোহণ করেছিলেন। ইহুদিরাও মনে করে এই পথরটি পবিত্রতম। এরা মনে করেন এই ডোম অব দ্য রক তাদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত পবিত্রতম উপাসনালয়।

এই পবিত্র এলাকায় রয়েছে ছোট বড় নানা স্থাপনা। এর মাঝে একটি মসজিদুল আকসা। মসজিদুল আকসা অর্থ ‘দূরের মসজিদ
এই পবিত্র এলাকায় রয়েছে ছোট বড় নানা স্থাপনা। এর মাঝে একটি মসজিদুল আকসা। মসজিদুল আকসা অর্থ ‘দূরের মসজিদ

 

এই পবিত্র এলাকায় রয়েছে ছোট বড় নানা স্থাপনা। এর মাঝে একটি মসজিদুল আকসা। মসজিদুল আকসা অর্থ ‘দূরের মসজিদ’। ইতিহাস থেকে জানা গেছে, এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন হযরত ইবরামি (আ.)। কাবাঘর নির্মাণ করার পর তিনি জেরুজালেমেও একটি মসজিদ তৈরি করেন। কাবা ঘর থেকে এর অবস্থান দূরে হওয়ায় হযরত ইবরাহিম (আ.) একে ‘দূরের মসজিদ’। বা ‘আল-আকসা’ নামে ডাকতেন। এখানে হযরত মোহাম্মদ (সা.) মিরাজের রাতে নামাজ পড়েছিলেন। ইতিহাস থেকে জানা যায় মিরাজের রাতের যে তারিখটি ছিলো, তখন বাইতুল মুকাদ্দাসের ইমারতটি ধ্বংসপ্রাপ্তই ছিলো। তবে এর মানে এই নয় যে, সে এলাকা একদম শূন্য ছিল। প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিলো সেই পবিত্র এলাকা। এবং সেখানে অনেকগুলো দরজাও ছিলো। ছিলো পূর্ববর্তী নবীদের ব্যবহার করা চিহ্ন। মসজিদুল আকসা ছিলো ইসলামের প্রথম সময়ের কিবলা।

বাইতুল মুকাদ্দাসে রয়েছে আরো কয়েকটি স্থাপনা। এদের একটি কুব্বাত আস সিলসিলা। কুব্বাত আন নবী। কম্পাউন্ডের ভেতরে আছে চল্লিশ হাজারের বেশি মুসলমানের বসবাস। আছে মাদরাসা, স্কুলসহ অনেক কিছুই। পুরো কম্পাউন্ড ঘুরতে সময় নেবে কয়েক ঘণ্টা। যখন ইসরাইলের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে তখন বাইরে থেকে কম্পাউন্ডের দরজায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে বাইরের লোক প্রবেশ করতে না পারলেও ভেতরের মুসলমানরা নিয়মিত কাজ চালু রাখেন।

কম্পাউন্ডের বাইরের দিকে রয়েছে পশ্চিম দেওয়াল। এখানে ইহুদিরা প্রার্থনা করেন
কম্পাউন্ডের বাইরের দিকে রয়েছে পশ্চিম দেওয়াল। এখানে ইহুদিরা প্রার্থনা করেন

 

কম্পাউন্ডের বাইরের দিকে রয়েছে পশ্চিম দেওয়াল। ধারণা করা হয় হযরতম মোহাম্মদ (সা.) এই দেওয়ালের কোথাও তার বাহন বোরাক বেঁধে রেখেছিলেন। চুনাপাথরের এই দেওয়ালটি এখন ইহুদিদের দখলে রয়েছে। ইহুদিরা বিশ্বাস করে এটি হযরত সুলাইমান (আ.) তৈরি উপাসনালয়ের ধ্বংসাবশেষ। বাইবেল অনুযায়ী, খৃস্টের জন্মের হাজার বছর আগে রাজা ডেভিড বা হযরত দাউদ (আ.) জেবুসাইটদের থেকে জয় করে নেন জেরুজালেম। পরে তিনি তার রাজ্যের রাজধানী বানান এই এলাকাকে। তার ছেলে রাজা সলোমন বা সুলাইমান (আ.) সেখানে উপাসনালয় তৈরি করেন। পশ্চিমের এই দেওয়ালটি সেই উপাসনালয়ের ধ্বংসাবশেষ। এ কারণেই ইহুদিরা এখানে প্রার্থনা করেন।

জেরুজালেমের পুরাতন অংশ গুরুত্বপূর্ণ খৃস্টানদের কাছেও। বেশিরভাগের ধারণা যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ ও সমাধিস্থ করা হয় ওখানেই। সেই স্থানটিতে রয়েছে তাদের পবিত্র উপাসনালয়, চার্চ অব দ্যা হোলি সেপালচার।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ইভানজেলিক্যাল খৃস্টানরা মনে করেন বাইবেলের বার্তা অনুযায়ী ইসরাইলে ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা খৃস্টানদের ধর্মীয় দায়িত্ব। সম্ভবত এ কারণেই দখলদার ইসরাইলকে বরাবরই প্রশ্রয় দিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসকরা। ক্ষমতাধর এই দেশটির উলঙ্গ সমর্থনে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ইসরাইল।

প্রতিবেদনটির ভিডিও দেখুন