গভীর সঙ্কটে বাংলাদেশের রাজনীতি

-

  • আলফাজ আনাম
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:২৩

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন গভীর সঙ্কটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। এই সঙ্কট শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নয় ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে রয়েছে। যদিও বিরোধী দলের সঙ্কটের দিকগুলো গনমাধ্যমে যেভাবে প্রকাশ হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু ভেতরের চিত্র এমন নয়। বিএনপির মধ্যে সঙ্কট ও হতাশা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই প্রথম জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মতভিন্নতা প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের অসুস্থতার পর জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে নানামুখী সঙ্কট ও বিরোধ রয়েছে। যদিও মনে করা হয় জাতীয় পার্টি নিয়ন্ত্রনের চাবিকাঠি ক্ষমতাসীন দলের হাতে রয়েছে।


২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারার বড় ধরনের পরিবর্তনের শুরু। গনতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ তথা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ধারনার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর সে সরকার পাঁচ বছর মেয়াদ পুরন করে। আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও সরকার তা বাস্তবায়নে সে ধরনের কোনো চাপের মুখে পড়েনি। এই সরকারের মেয়াদ শেষে ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাংলাদেশে ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ধারনা বদলে যায়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় যে ভোট হয়েছে তার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে সংসদীয় রাজনীতির দ্বিদলীয় ধারার সম্ভবনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নয় সাধারন মানুষের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। রাজনীতি নিয়ে মানুষের আগ্রহ যেনো কমে গেছে। আপাত দৃষ্টিতে রাজনীতিতে ভোটের গুরুত্ব হারিয়ে গেছে।


এই নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা আরো সংহত হয়েছে। শুধু রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রনে নয় দলের ওপর প্রধানমন্ত্রী তার পূর্ন কর্তৃত্ব প্রতিষ্টা করেছেন। এর প্রতিফলন ঘটেছে মন্ত্রীসভায়। দলের পুরানো নেতাদের পুরোপুরি ভাবে মন্ত্রীসভা থেকে বাদ দিয়ে এক ঝাক নতুন মুখ এনেছেন। যাদের রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার নিজের আত বিশ্বাসের ওপর ভর করে। কার্যত তিনি এই মন্ত্রীদের পরিচালনা করছেন। এর মধ্যদিয়ে ক্ষমতাসীন দলে নতুন নেতৃত্ব বিকাশের চেষ্টা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কিন্তু এই মন্ত্রীসভা নিয়ে দলের সিনিয়র নেতারা নিশ্চুপ। তারা বিষয়টি কিভাবে দেখছেন তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জার্মানীর টেলিভিশনের সাথে সাক্ষাতকারে বলেছেন এটাই তার শেষ মেয়াদ। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির উত্তরসূরী নির্ধারনের প্রস্ততি মাথায় রেখে দল ও রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। মন্ত্রীসভায় এক ঝাক নতুন মুখের সাথে ভবিষ্যত রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের যে সংযোগ আছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ভবিষ্যত উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দল কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় তা হবে দেখার বিষয়।


বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি শক্তির প্রভাব সব সময় গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের ভুমিকা সর্বজনবিদিত। কিন্তু বাংলাদেশে চীনের ভুমিকা এখন অনেক বেশি দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আঞ্চলিক ও পরাশক্তিগুলোর এই নতুন মেরুকরণে বাংলাদেশের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। এর বিপজ্জনক কিছু দিক রয়েছে। নির্বাচনের পর ভারতের গণমাধ্যমে চীনের ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে। ভারতের বুদ্ধিজীবী মহলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যেও একই সুর আছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা যত বাড়বে ভারতের মধ্যে এক ধরনের চীন ভীতি কাজ করতে পারে। ইতোমধ্যে ভারতে কিছুটা উসখুস শুরু হয়ে গেছে। এর প্রভাব আগামি দিনে দেশের আভ্যন্তরিন রাজনীতিতে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মান নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের (পেন্টাগন) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এবং একদল কংগ্রেসম্যান। দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদারে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তাঁরা এ উদ্বেগ জানান। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র রক্ষায় সময়োপযোগী ব্যবস্থা’ নেওয়ার আহ্বান জানান।


ওই চিঠি পাঠানোর পর ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল হিলে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক কমিটির শুনানিতে দেশটির ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের অধিনায়ক অ্যাডমিরাল ফিলিপস ডেভিডসনও বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। তিনি বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রবনতা উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চাওয়ায় এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলেও ডেভিডসন জানান। কংগ্রেস ও পেন্টাগনের এমন অবস্থান বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সরকারের জন্য উদ্বেগের কারন হতে পারে।


২.
বিরোধী দল বিএনপি স্পষ্টত এখন নেতৃত্বের শূন্যতায় ভুগছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি অনিশ্চিত। নেতাকর্মীরা মনে করেন না তিনি সহসাই মুক্তি পাবেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হলেও দীর্ঘ সময় তিনি বিদেশে অবস্থান করায় হতাশ নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে সিদ্ধান্ত দিতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির ফিরে আসা অনেক দুরুহ। তবে এ কথা স্বীকার করতে হবে নানামুখী চাপ ও দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও বিএনপিতে এখন পর্যন্ত কোনো ভাঙ্গন ধরেনি। অর্থাৎ মত বিরোধ সত্ত্বেও দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। অথচ এমন পরিস্থিতিতে অতীতে বিএনপিতে ভাঙ্গন ধরেছে। সম্প্রতি দলের অঙ্গ সংগঠনগুলো নেতৃত্ব পুর্নগঠনের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। সিনিয়র একাধিক নেতা কাউন্সিল অনুষ্টানের তাগিদ দিয়েছেন।
জোটবদ্ধ রাজনীতি নিয়েও বিএনপির অবস্থান অস্পষ্ট হয়ে পড়ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আরো কার্যকর করার ব্যাপারে বিএনপি নেতারা বেশি আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এই জোটের প্রধান শরীক জামায়াতে ইসলামীও জোটে থাকার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। কিন্তু কোনো পক্ষই জোট বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিচ্ছে না। তবে ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপি কতদূর এগুতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এক সময়ের আওয়ামীলীগের মিত্র ও বাম ধারার ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিএনপির পথচলা নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে পারে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে তারা বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলেছে। এছাড়া মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিএনপির যে আদর্শিক চেতনা তার সাথে এই দলগুলোর অবস্থানের যথেষ্ট দূরত্ব রয়েছে। এরপরও গনতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিএনপির নেতৃত্বে যদি দলগুলো রাজপথে সক্রিয় থাকতে পারে তাহলে দৃশ্যমান বিরোধী রাজনীতিবিহীন অবস্থার অবসান ঘটতেও পারে।


৩.
জামায়াতে ইসলামীতে সংস্কার ও একাত্তর সালে দলের ভুমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় পদত্যাগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জুকে বহিস্কার করা হয়েছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াত বড় ধরনের ভাঙ্গনের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে গনমাধ্যমে যে ধরনের খবর প্রকাশ হচ্ছে বাস্তবে তার তেমন কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। মুজিবুর রহমান মঞ্জু নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন। সেই রাজনৈতিক দলে ভিন্নমতের জামায়াতÑশিবিরের নেতাকর্মীদের নিয়ে হবে না আরো বিভিন্ন দল ও মতের ব্যক্তিরা থাকবেন তা স্পষ্ট নয়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা যেভাবে সারা দেবেন বলে আশা করা হয়েছিলো তেমনি পাওয়া যায়নি বলে মনে করেন এ প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা। তবে সিভিল সোসাইটির একটি অংশের সাথে দল গঠনের উদ্যেক্তাদের সর্ম্পক আছে এমন আভাষ পাওয়া গেছে। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন এমন তরুন কিছু রাজনৈতিক অ্যাকটিভিস্ট এই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত আছেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন তিনি সিভিল সোসাইটিতে ভুমিকা রাখতে চান। তারা কতটা কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারেন তা দেখার বিষয়।


জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সংস্কার নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। কিন্তু এই মুহুর্তে ক্ষমা চাওয়া কিংবা সংস্কারের দাবি দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক সংকটের একটি রুপ। একাত্তর সালে জামায়াতের ভুমিকা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নিজস্ব ব্যাখা রয়েছে। এই ব্যাখা চ্যালেঞ্জ করার জন্য ব্যারিস্টার রাজ্জাক যে সময় বেছে নিয়েছেন তা কর্মীদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পায়নি। কারন দলের নেতাকর্মীরা মনে করেন চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে নিপীড়নের মধ্যে রয়েছে। এই মুহুর্তে প্রকাশ্য মতভিন্নতার চেয়ে জরুরি হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ থাকা ও দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা। এছাড়া কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা নেতাকর্মীরা দলের নির্দেশনার বাইরে যে কোনো প্রস্তাবে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে চান না। এছাড়া জামায়াত-শিবির থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক সাফল্য পেয়েছেন এমন নজির নেই। এর আগে ১৯৭৯ ও ১৯৮২ সালে এ ধরনের ভাঙ্গন হলেও বেড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা দেশের রাজনীতিতে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারেননি। জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভিন্নচিন্তার ক্ষেত্রে এই দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে থাকেন।


তবে এই ঘটনার পর জামায়াত দলের মধ্যে আভ্যন্তরিন সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে কমিটি গঠন করেছে। এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়ে যায় তা দেখার বিষয়। কারন জামায়াতে সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়া জটিল ও আমলাতান্ত্রিক। এরমধ্যে বছর শেষে দলের নতুন আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচন হবে। যা দলটির ভবিষ্যত গতি প্রকৃতির ওপর প্রভাব ফেলবে। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়া সরকার কিভাবে দেখছে তা স্পষ্ট নয়। তবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে এক ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে। নিষিদ্ধ না হলে সে প্রক্রিয়া ভিন্নরুপ নিতে পারে।


৪.
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির ভুমিকা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। ২০১৪ সালের মতো এবারও দলটি অনুগত বিরোধী দলের ভুমিকায় আছে। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গুরুতর অসুস্থ। এরশাদের পর দলের নীতি নির্ধারক ছিলেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলে গেছে, মনে হচ্ছে এরশাদ তার দলের উত্তারাধিকার হিসাবে ভাই গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করতে চান। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে সমর্থন পেয়েছেন জিএম কাদের। ফলে নিশ্চুপ হয়ে গেছেন রওশন এরশাদ। কিন্তু দলের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন রয়েছে। এরশাদের অবর্তমানে দলটি ঐক্যবদ্ধ থাকবে এমন আশা করা যায় না। তবে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত নির্ধারন হবে ক্ষমতাসীন দলের মাধ্যমে।


সামিগ্রিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরনের শূন্যতার তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব সব রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে পড়েছে। ফলে সব রাজনৈতিক দলকে সংস্কার বা অবকাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। এই পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে রাজনীতির দৃশ্যপট অনেকখানি বদলে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।