ম্যাক্রোর ইসলাম বিদ্বেষ ও ফ্রান্সের মুসলিম কমিউনিটি

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোকে ব্যাঙ্গ করে কুয়েত এর শিশুদের প্রতিবাদ - এএফপি

  • আহমেদ বায়েজীদ
  • ০৭ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৩৫

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। যার এক সময় খ্যাতি ছিলো উদার মধ্যপন্থী হিসেবেই। তিনি কিছুদিন ধরেই ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্য করে যাচ্ছেন। ইসলামকে টার্গেট করেই একটি আইনের খসড়াও প্রস্তুত করছে তার সরকার। দেশটিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষ। এসব ঘটনায় সারা বিশ্বে ফ্রান্সবিরোধী জনমতও প্রবল হয়েছে। কেন তার এই এই ইসলাম বিদ্বেষ তা নিয়ে থাকছে আজকের প্রতিবেদন।

স্কুলের ক্লাসে একজন শিক্ষক মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা. এর কার্টুন আকার কারণে ক্ষুদ্ধ এক চেচেন মুসলিম ওই শিক্ষককে হত্যা করে। এই ঘটনার পর ফ্রান্সে মুসলিমদের ওপর শুরু হয়েছে ধরপাকড়। প্যারিসের কাছে একটি মসজিদ অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ৫০টির বেশি মসজিদ রেইড দিয়েছে পুলিশ। এর কয়েক দিন আগে ম্যাক্রো এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ইসলাম ধর্ম সারা বিশ্বেই সঙ্কটে রয়েছে।

ফ্রান্সে এসব নতুন নয়। ২০১৫ সালে দেশটির ব্যাঙ্গ ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা.কে নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশের পর ওই অফিসে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত হয় কয়েক সাংবাদিক। ওই ঘটনার পরও দেশটিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এমন ইসলাম বিদ্বেষ চলতেই থাকে।এবার শার্লি এবদো হামলায় দায়িদের বিচার শুরু উপলক্ষে পত্রিকাটি আবারো সেই কার্টুনটি প্রকাশ করে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোকে সেই ঘটনার নিন্দা জানাতে আহŸান জানানো হলেও তিনি রাজি হননি।

দুর্ভাগ্যবশত ফরাসি সরকার সেক্যুলারিজমের কট্টর একটি সংস্করণ অনুসরণ করছে। যার নেতৃত্বে এখন ম্যাক্রো নিজেই। শার্লি হেবদো অফিসে হামলার ঘটনাকে ফ্রান্সের নাইন-ইলেভেন আখ্যাদিয়ে ওই সময় দেশটিতে বর্ণবাদকে আরো জোড়ালো রূপ দেয়া হয়। এমনিক টুইন টাওয়ারে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পরিবর্তন এসেছে সেগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে ফ্রান্স।

মুসলিম বিদ্বেষর প্রভাবেই ফ্রান্সজুড়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলাদেঁর জনপ্রিয়তা দ্রæত কমতে থাকে এবং উত্থান হয় কট্টর ডানপন্থী নেতা মেরিন লা পেনের। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০১৭ সালের নির্বাচনে এমানুয়েল ম্যাক্রোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন আন্ডারডগ লা পেন। প্রথম দফা নির্বাচনে ম্যক্রো প্রথম আর লা পেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেলে এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় রাউন্ডে। শেষ পর্যন্ত ম্যাক্রো ভোটে জিতলেও ইউরোপের একটি নেতৃত্বস্থানীয় দেশে কট্টরপন্থী লা পেনের এই জনপ্রিয়তা বিশ^বাসীকে অবাক করে। ফরাসিদের কট্টর হয়ে ওঠার প্রমাণ ছিল ওই নির্বাচন।

ফ্রান্সের নির্বাচনী রাজনীতিতে ম্যাক্রার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এখন ঝুকিপূর্ন। তা থেকে উদ্ধার পেতেই ইসলাম বিদ্বেষ নিয়ে মাঠে নেমেছেন । দেশটি অর্থনৈতিক দূরাবস্থা ও করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারার কারনে আগামী নির্বাচনে দক্ষিণপন্থী লি পেনের বিজয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছিলো। লি পেনকে সামাল দিতেই ম্যাক্রোঁ এখন ‘জাতীয় প্রতিপক্ষ’ হিসেবে হাজির করেছেন ইসলামকে। কিন্তু অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার কারণে ম্যাক্রোঁর প্রতি জনসমর্থন কমছিল। কিছু দিন আগে সেটা ২৯ শতাংশের নীচে চলে আসে। এখন লি পেনকে টপকে উগ্রজাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক কৌশল গ্রহন করেছেন।

কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা আদর্শের লোক না হয়েও মধ্যপন্থী হিসেবে ক্ষমতায় এসে ম্যাক্রোর সামনে সুযোগ ছিলো লোকরঞ্জনবাদকে পাশে সড়িয়ে উদারভাবে দেশ শাসনের। ইউরোপ জুড়ে ততদিনে দ্রæতই মাথাচাড়া দিতে শুরু করছে লোকরঞ্জনবাদ। তার মধ্যেও ম্যাক্রোকে মনে করা হতো একজন উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতিক যিনি পারবেন লোকরঞ্জনবাদের ঢেউ রুখতে। কিন্তু সেই ম্যাক্রোই এখন হয়ে উঠেছেন ইউরোপের পপুলার নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন। চরম ডানপন্থীদের নীতি গ্রহন করেছেন। অনেক ফরাসী ম্যাক্রোর এসব নীতিকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, এসব না করলে তার জায়গায় কোন কট্টর ডানপন্থী নেতা ক্ষমতায় চলে আসতে পারেন। কারণ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে যে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন হয়েছিল তারপর থেকে ম্যাক্রোর জনপ্রিয়তা কমে এসে ঠেকেছে ২৯ শতাংশে।

ফরাসি প্রেসেডিন্টে এরপর শুরু করেছেন প্রকাশ্য ইসলাম বিদ্বেষ। যার ফলে ফ্রান্সে বেড়েছে ইসলামভীতি। ফরাসি সরকার আর তাদের সমর্থক মিডিয়া এখন প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ভাবে ইসলামকে উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক মন্তব্য করছে। ফ্রান্সের মুসলিমরা প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর প্রতি এই ইসলাম বিদ্বেষ বন্ধের আহ্বান জানালেও তিনি উল্টো দ্বিগুণ উৎসাহে এসব কর্মকান্ডকে বৈধতা দিচ্ছেন। যার ফলে ফ্রান্সে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ক্রমশই প্রাতিষ্ঠানিক রুপ নিচ্ছে।

কয়েকদিন আগে ইমানুয়েল ম্যাক্রো এক বক্তৃতায় বলেন, ইসলাম এমন এক ধর্ম যা সারা বিশে^ই সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এরপর তিনি ফ্রান্সে বিদেশী প্রভাবমুক্ত তথাকথিত এক উদার ইসলাম চালুর এবং সেই সাথে ফরাসি মসজিদগুলোতে বিদেশী অর্থায়নের তদারকি শুরু করার কথাও জানান। ম্যাক্রো বলেন, রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত করতে আইন করবে তার সরকার।

মূলত ইসলামকে টার্গেট করেই নতুন ওই আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা যায়। যদিও বলা হচ্ছে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীসহ সবাইকেই এর আওতায় আনা হবে। ফরাসি মুসলিমরা আশঙ্কা করছেন, নতুন এই আইনের ফলে শুধু শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদ নয়, ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম বিদ্বেষও এখন ফ্রান্সজুড়ে বেড়ে যাবে।

সেকুলারিজমের অজুহাতে ম্যাক্রো বারবারই ইসলাম বিদ্বেষকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকদিন আগে শার্লি এবদোর ইসলাম বিদ্বেষকে প্রতিষ্টিত করতে গিয়ে ম্যাক্রো বলেন, এটি মতপ্রকাশের অধিকার। ম্যাক্রোর বক্তৃতার মধ্যেই ফুটে উঠছে তার স্ববিরোধীতা। নিজেই বলছেন, তিনি চান সব নাগরিক ফ্রান্স রিপাবলিকের মূল্যবোধ ধারণ করবে। আবার পরক্ষণেই আঘাত করছেন ইসলামিক মূল্যবোধকে। ম্যাক্রো তার দেশের ৫০ লাখ মুসলমানকে প্রায়ই বলেন সহনশীল হতে, ইসলামকে কেউ কটুক্তি করলে সেটি মেনে নিতে। অথচ ইসলাম ধর্মের বিষয়ে বিন্দুমাত্র সহনশীলতা নেই তার মাঝে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এমন নীতি গ্রহণ করা হলে সেটি যে শুধু ফরাসিদের মাঝে ইসলামকে সম্মান করতে বাধা সৃষ্টি করবে তা নয়, বরং মুসলিমদের ওপর আসতে পারে একের পর এক আক্রমণ। আর তাহলে ভবিষ্যতের ফরাসি নাগরিক তৈরির উদ্দেশ্যে স্কুলে মুসলিম শিশুদের শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করা কিংবা হযরত মুহাম্মাদ সা. এর কার্টুন আকার মতো ঘটনা চলতেই থাকবে।

গত সপ্তাহে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের কাছে দুই নারীকে ‘নোংরা আরব’ গালি দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ফরাসি সরকার যদি ইসলাফোবিয়া অব্যাহত রাখে তাহলে এসব ঘটনা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শার্লি এবদোর ঘটনার পর সরকার ইসলাম বিদ্বেষ রুখতে সিরিয়াস হলে ক্লাস রুমে ওই শিক্ষক নবীজির কার্টুন আকতে সাহস করতেন না। মুসলিমদের জন্য এই ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। আবার এক উগ্রবাদী এই ঘটনার মধ্যে ঢুকে পড়ায় শুরু হলো সহিংসতা; কিন্তু এসব কিছুই হতো যদি ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে ইসলাম অবমাননাকে বৈধতা না দিত।
শার্লি এবদো ম্যাগাজিন অফিসে হামলার পর ধর্মীয় ও স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে ফরাসি সরকারের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কারণেই একের পর এক ঘটনা দেখতে হচ্ছে বলে সারা বিশ্বের মুসলিমরা মনে করছেন।

শার্লি এবদোর ওই ঘটনাটিই উগ্রবাদীদের জন্য রাস্তা খুলে দিয়েছে। সরকারের প্রশ্রয় পেয়ে ইসলাম বিদ্বেষীরা যেমন একের পর কাÐ ঘটিয়েই চলছে, তেমনি আইএস কিংবা আল কায়দা সমর্থকরা এসব ঘটনার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে। অর্থাৎ এই দুটি সমস্যার সমাধান একটি এবং সেট আছে ফরাসি সরকারের হাতেই। ২০১৫ সালে শার্লি এবদো অফিসে ওই হামলার ঘটনারও দায় স্বীকার করেছিল আলকায়দার ইয়েমেন শাখা। তারা বলেন, নবীজীকে কটুক্তির প্রতিশোধ হিসেবে ওই হামলা চালানো হয়েছে।

ওই ঘটনার পর ফ্রান্সের মুসলিম কমিউনিটিসহ সারা বিcMghর সব মুসলিম দেশ ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। ওই ঘটনর পরই ফ্রান্স জুড়ে বেড়ে যায় ইসলামফোবিক ঘটনা। এক হিসেবে দেখা গেছে ২০১৯ সালে ফ্রান্সে মুসলিমদের সাথে ইসলামফোবিক আচরণ হয়েছে এক হাজারের বেশি, যার মধ্যে ৭০টি ছিলো শারীরিক নিপীড়নের ঘটনা।

শার্লি এবদো হামলার পর মুসলিম বিশ্ব যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, নিউজিল্যান্ডেরক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ মুসল্লিকে হত্যার ঘটনা সেই উদারতা দেখাতে পারেনি খ্রিস্টান বিশ্ব। একমাত্র জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল ওই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা আখ্যা দিয়েছেন। নিজেদের উদার মানবিকতার ফেরিওয়ালা দাবি করা পশ্চিমা বেশিরভাগ দেশই ওই ঘটনার যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে একজন দেখিয়েছেন, যার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারতেন ইমানুয়েল ম্যাক্রো। তিনি নিউজিল্যান্ডেরপ্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডের্ন। শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসবাদীর ওই হামলার পর তিনি পুরো দেশকে সাথে নিয়ে দাড়িয়েছেন মুসলিমদের পাশে। হিজাব পরে হাজির হয়েছে শোকাহতদের সান্ত¡না দিতে। আসসালামু আলাইকুম বলে বক্তৃতা শুরু করে কিংবা কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু করে আরডের্ন বিশ^কে দেখিয়ৈছেন এমন বড় একটি ট্রাজেডির পরও কিভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হয়। তার ওই বিচক্ষণতার কারণেই নিউজিল্যান্ডে কোন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মাথাচাড়া দিতে পারেনি এবং পরের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয়ী হয়েছে আরডের্নের দল। গত ৫০ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে তার দল।
আর সেটি পারেননি বলেই ফ্রান্সে ম্যাক্রোর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। ম্যাক্রো নিজেও শামিল হয়েছেন বর্ণবাদী প্রচারণায়। পপুলিস্ট ব্লকের ভোটব্যাংক দখল করতেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমনটা করছেন নাকি বরাবরই তিনি এই মানসিকতা পোষণ করেন সেটি বোঝা কষ্ট।তিনি হয়তো ভেবেছেন এই নীতিতেচললেই পপুলিস্ট ব্লকের সমর্থন পাবেন, যার ফলে আরো এক মেয়াদে তার এলিসি প্যালেসে থাকা নিশ্চিত হয়ে যাবে।

ম্যাক্রো আর তার সরকারের এসব কর্মকান্ডের মুসলিম বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান বলেছেন, ম্যাক্রোর মানসিক চিকিৎসা দরকার। একে পার্টির একটি প্রাদেশিক কংগ্রেসে এরদোয়ান বলেন, ইসলাম ও মুসলিম নিয়ে ম্যাক্রোর সমস্যাটা কোথায়? তার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা দরকার। একটি রাষ্ট্র যখন একটি ধর্মগোষ্ঠি সম্পর্কে এমন মানসিকতা পোষণ করে সেই রাষ্ট্রের প্রধান সম্পর্কে আর কি বলা যায়? সবার আগে তার চিকিৎসা করানো উচিত। এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এরদোগানের এই বক্তব্যের পরই ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে। টুইটার, ফেসবুকে এ বিষয়ক হ্যাশট্যাগ ভাইরাল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে কুয়েতের সুপার মার্কেটের দোকানিরা তাদের দোকান থেকে ফরাসি পন্য নামিয়ে ফেলছেন। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলোর ফরাসি পন্য বর্জন না করার অনুরোধ জানিয়েছে। এমন সময় পাকিস্তান সরকার ফ্রান্সের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কেনার চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বজুড়ে যে প্রতিবাদ হচ্ছে তাতে সারা দুনিয়ায় উদার দেশ হিসাবে ফ্রান্সের পরিচিত মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ফ্রান্সে ইসলাম বিদ্বেষ বন্ধ করা কিংবা উগ্রবাদী হামলা ঠেকানোর চাবিকাঠি আছে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর হাতেই। তিনি সেটি করবেন নাকি পপুলিস্ট ব্লকের প্রিয় হয়ে উঠতে ইসলাম বিদ্বেষ চালিয়ে যাবেন তা দেখার বিষয়।

বিডিভিউজ-এ প্রকাশিত লেখার স্বত্ব সংরক্ষিত। তবে শিক্ষা এবং গবেষণার কাজে সূত্র উল্লেখ করে ব্যবহার করা যাবে