করোনা ছড়াচ্ছে কারা

ছবি - সংগৃহীত

  • শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ
  • ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৩:২৬

রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক লড়াইয়ে বিপর্যস্ত ছিলো পৃথিবী। তারপর আসে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। শুরু হয় নতুন লড়াই। পৃথিবীর মানুষ এক হয়ে লড়তে থাকে করোনার বিরুদ্ধে। এই লড়াই চলছে। তবে এর মধ্যেই পৃথিবী ফিরে যাচ্ছে আবার সেই পুরনো লড়াইয়ে। ইস্যু, ‘করোনা ছড়াচ্ছে কারা!’ ।

ভারতের গোঁড়া হিন্দুরা দাবি করছেন, চীন এবং মুসলমানরা মিলে দেশটিতে ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস। দাবির পেছনে দেখানো হচ্ছে প্রমাণও। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে অংশ নেওয়া তাবলিগ জামাতের কয়েকজন মুসলমানের। মসজিদে মসজিদে ঘুরে বেড়ানো তাবলিগের অনেকের শরীরেই পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাস।
ভারতজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। মামলা ঠুকে দেওয়া হয় নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রধান মাওলানা সাদ কাহন্দলভিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে। মামলার পর লাপাত্তা হন মাওলানা সাদ। সমালোচনার আগুনে পড়তে থাকে আরো ঘি। কোনো কোনো গোষ্ঠি এবার দায়ী করতে থাকেন মুসলমানদেরকে। ছড়াতে থাকে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে বিবিসি। এতে জানানো হয়, ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমও মুসলিমবিরোধী এই বিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয়েছে মুসলিমবিরোধী হ্যাশট্যাগ। ছড়িয়ে পড়েছে গুজব।

গুজব কীভাবে ছড়ায়, কোথা থেকে আসে, এই বিষয়গুলোর ওপর কাজ করছে একটি ‘অল্টনিউজ’ নামের একটি ওয়েবসাইট। এর সম্পাদক প্রতীক সিনহা একটি ভুয়া ভিডিওর উদাহরণ তুলে ধরেন। এতে দেখা গেছে মুসলমানরা থালা-বাটি চেটে খাচ্ছেন। এই দৃশ্যকে প্রচার করা হচ্ছে, মুসলমানরা এভাবেই চেটে-পুটে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে। ওয়েবসাইটটির পক্ষ থেকে যাচাই করে দেখা গেছে ওভাবে চেটে-পুটে খাওয়ার অভ্যাস বোহরা সম্প্রদায়ের মুসলমানদের রীতি। খাওয়ার পর থালায় একটিও খাবারের কণা ফেলে রাখতে চান না তারা।
ভারতজুড়ে ভাইরাল হওয়ায় এইসব গুজবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মুসলিম নেতারা। তাবলিগের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েই মার্কাজে সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে পুলিশের অনুমতি ছিলো। তাছাড়া ওইসময় ভারতজুড়ে কোনো লকডাউন ছিলো না। আর যখন লকডাউন ঘোষণা হয়, তখন মারকাজে থেকে যাওয়া অনেক মুসলমানের বাড়ি ফেরার সুযোগ ছিলো না।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফরিয়াব জিলানি বলেছেন, দুই পক্ষেরই ভুল রয়েছে। ওই সমাবেশে যারা গিয়েছিলেন, তাদের উচিত ছিলো নিজেদের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। আবার সরকারের উচিত ছিলো সমাবেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। লকডাউনের কারণে যারা ফিরতে পারেননি, তাদের ফেরার ব্যবস্থা করা। তিনি দাবি করেন, ভারতীয় মুসলমানরা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা যথাযথভাবেই মানছেন। আলেম-উলামারাও জমায়েত না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তাবলিগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি বলেছেন, তাবলিগ জামাত যদি এই সমাবেশ করে ভুল করে থাকে, তাহলে সরকার কী করছিল? তিনি বলেন, মার্কাজে নিজামুদ্দিনের পাশেই থানা আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পুলিশ আছে দিল্লিতে। তারা কি সমাবেশে হাজির মানুষকে কোনোভাবে সচেনতন করেছিলেন? একবারও মাইকিং করেছিলেন এলাকায়? সেটা করলেই তো এরকম পর্যায়ে যেতো না।

তবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এসব যুক্তি উড়িয়ে দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বাংলা পত্রিকা ‘স্বস্তিকা’র সম্পাদক রন্তিদেব সেনগুপ্ত দাবি করেন, এটা তাবলিগ জামায়াতের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ধর্মান্ধতা আর পশ্চাদপদতা তাদেরকে ওইদিকে নিয়ে গেছে।
ধর্মান্ধতার এই অভিযোগ মানতে রাজি নন তাবলিগের মুসলমানরা। তারা টেনে আনছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির কয়েকজন নেতার বক্তব্যকে। করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হিন্দুদের গোমূত্র পান করতে উৎসাহিত করে সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন ওই নেতারা। এছাড়া করোনার মহৌষধ হিসেবে গায়ে গোবড় মাখার অনেক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে। গোঁড়া হিন্দুদের অনেককে দেখা যাচ্ছে গোবরের ঢিবিতে শরীর ডুবিয়ে মাথা বের করে রাখতে।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়েই ভারতজুড়ে চলছে মুসলিমবিরোধী ঢেউ। এতে বাতাস দিচ্ছে সুযোগসন্ধানী কিছু শক্তি। মুসলিমবিরোধী এই অভিযোগকে খন্ডন করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কলকাতা টিভি। এতে গত ১২ মার্চ থেকে কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়, ১২ মার্চ রাহুল গান্ধী টুইট করে জানান, করোনা পরিস্থিতি সাঙ্ঘাতিক রুপ নিতে পারে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এর পরদিন ১৩ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, করোনা ভাইরাস ভারতের জন্য তেমন ভয়ানক কিছু নয়। ১৫ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে চার হাজার মুসলিম নিয়ে তাবলিগি জামায়েত শেষ হয়। এর পরদিন ১৬ মার্চ গোমূত্র খেলে করোনার প্রকোপ কমবে, এ ধরণের প্রচার চালিয়ে হিন্দু মহাসভার উদ্যোগে সভা হয়। ১৬ মার্চ দিল্লি সরকার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধের আদেশ দেয়। তবে সব এলাকায় সে আদেশ পৌঁছায় না। ১৭ মার্চ তিরুপতি মন্দিরে ৪০ হাজার তীর্থযাত্রীর জমায়েত হয়। পরদিন ১৮ মার্চ মন্দির কমিটির হিসাবে বিকাল তিনটা থেকে ৬টা পর্যন্ত আরো ২৮ হাজার ৭১৬ জন তীর্থযাত্রী যান। ওইদিন এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার প্রণামি আদায় হয়। ১৯ মার্চ, বিকাল ৫ টায় ৪২ হাজার ৮৪জন তীর্থযাত্রী যান। ওইদিন প্রণামী জুটে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা।

১৯ মার্চ দেশটির প্রধানমন্ত্রী জনতা কারফিউ ঘোষণা করেন। ২২ মার্চ সকাল থেকে জনতা কারফিউ ও বিকাল থেকে থালা, ঢোল, কাসুন্দি রাস্তায় বাজানো হলো। এইসব বাদ্যের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসকে চলে যেতে অনুরোধ করা হলো।

২৩ মার্চ রেলে করে হাজার হাজার শ্রমিক বাড়িতে গেলো। ২৫ মার্চ গোটা ভারত লকডাউন হলো। তবে ওইদিনই দেখা গেছে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ দলবলসহ মূর্তি নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন।

৩০ মার্চ দিল্লিসহ বড় বড় শহর থেকে অন্তত ১৭ থেকে ১৮ লাখ মানুষ বাড়ি ফেরার জন্য রাস্তায় নামলো। তাদের ফেরার ব্যবস্থায় সরকারের কোনো প্রস্তুতি ছিলো না। এতে ২৫জন শ্রমিকের মৃত্যু হলো। ওইদিনই অর্থাৎ ৩০ মার্চ তাবলিগ জামায়াতের পাঁচজনের মৃত্যু হলো।

কলকাতা টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এই তথ্যগুলো উপস্থাপন করার পর জানানো হয়, দেশটিতে এক শ্রেণির সাংবাদিক প্রচার করছে, কেবল তাবলিগ জামায়াতের জন্যই ভারতে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। এরা করোনার সংক্রমণের জন্য চীন আর মুসলমানদের দায়ী করে আসছে।
এতে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ধর্মপ্রাণদের জন্য। মূলত এই সঙ্কটে জনসমাগম এড়িয়ে চলতেই পরামর্শ দিচ্ছেন ধর্মীয় নেতারা। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও তাবলিগ জামাতে আসা আটকেপড়া বিদেশিদের ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলোর আলেম, যাজক, পুরোহিতরা প্রচার করছেন ধর্মের বাণি। বৃটেনে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রথম সারিতে যে চিকিৎসকদের মৃত্যু হয়েছে তাদের চারজন মুসলমান। আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বংশোদ্ভ’ত বৃটেনের এই চিকিৎসকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে দেশটির সরকার।

যারা ধর্মকে ভালোবাসেন। তারা মানুষকেও ভালোবাসেন। নিজের জীবন বিপন্ন করে এগিয়ে যান মানুষের সেবায়। মানুষের মঙ্গল কামনায় এখনো ঘর ছেড়ে অনেকেই যাচ্ছেন উপাসনালয়ে। তা যে মুসলমানদের ক্ষেত্রে হচ্ছে এমন নয়। অন্য ধর্মের মানুষরা এমন করছেন।
ঘরে থাকার নির্দেশ অমান্য করায় আমেরিকার ফ্লোরিডার এক যাজককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিএনএন জানায়, তার বিরুদ্ধে গির্জায় জনসমাগম করা এবং জরুরি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। রডনি ব্রাউ নামের ওই যাজক ঘোষণা দিয়েছিলেন, পৃথিবী যতদিন ধ্বংশ না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত তিনি ফ্লোরিডার এই বড় গির্জার দরজা বন্ধ করবেন না। কিন্তু পুলিশ ততক্ষণ অপেক্ষা করেনি। তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু যাজকের আইনজীবি ম্যাট স্ট্যাভার এক বিবৃতিতে শেরিফের এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে জানান, গির্জায় রবিবারের উপাসনা খুব সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছিলো। প্রতিটি প্রার্থনাকারীকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছিলো। গির্জার কর্মীদের হাতে ছিলো গ্লোভস।
ধর্মীয় আবেগের বিপরীতে আইন দিয়ে সুবিধা করতে পারছে না ইসরাইলও। দেশটির রাজধানী তেলআবিবের পাশের একটি শহর ‘বনি ব্রাক’। এখানে দুই লাখ লোকের বাস। এরা দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ। গোড়া ইহুদি এই লোকদের ডাকা হয় ‘হারেদিম’। করোনা পরিস্থিতিতেও এদেরকে জনসমাগম থেকে দূরে রাখা যায়নি। বনি ব্রাকের হারেদিমদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিএনএন। এতে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের এক ‘রাব্বি’র শেষকৃত্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শত শত লোক জড়ো হয়েছিলো। হারেদিমরা আলাদা আলাদা অনেক দলে বিভক্ত। প্রতিটি দলে একজন ‘রাব্বি’ বা যাজক থাকেন। তজভি শেনকার নামের ওই রাব্বির শেষকৃত্যে উপস্থিত লোকদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ছিলো না।
হারেদিমদের নিয়ে সিএনএনে পরিবেশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিডিভিউজ যখন এই প্রতিবেদনটি তৈরি করছিলো, তখন খবর আসে গোঁড়াদের শহর বনি ব্রাক লকডাউন করে দিয়েছে ইসরাইল। বিবিসির খবরে জানানো হয়, শহরের বাসিন্দাদের বুঝিয়ে ঘরে রাখা যাচ্ছিলো না বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইসরাইলের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই শহরে দুই লাখ মানুষের বসতি। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। তেল আবিবের বাইরে তেল হামোর হাসপাতালের ৬০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত রোগীই বনি ব্রাক শহরের বাসিন্দা।

ইসরাইলের পুলিশ জানিয়েছে, কিছুদিন আগে জেরুজালেমের কাছে একটি এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানে বিপুল লোকের সমাগম করেছিলো গোঁড়া ইহুদিরা। অথচ দেশটির সরকার জানিয়েছে, কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ দশজনের উপস্থিতি সহ্য করা হবে। উপস্থিত একজন কোয়ারেন্টাইনে থাকার বাধ্যবাধকতা ভেঙে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। তাকেসহ ওই অনুষ্ঠান থেকে আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায় বনি ব্রাকের বাসিন্দাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। সেখানে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও সেগুলো খোলা রাখা হচ্ছে। এ কারণে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রথম লড়াইটা করতে হচ্ছে তাদের সঙ্গে।
বিষয়গুলো ভালোভাবে নিচ্ছে না হারেদিমরা। তারা এগুলোকে ধর্মীয় জীবনযাপনে অনুপ্রবেশ হিসেবেই বিবেচনা করছে। ইসরাইলের পুলিশের দেওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ হারেদিমদের দমন করছে অনেকটা নাৎসি কায়দায়। আর হারেদিমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। এমনকি একটি চিকিৎসক দলের ওপরও পাথর ছুঁড়ে মেরেছে তারা।

পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, জেরুজালেম এবং তেলআবিবের মধ্যে অবস্থিত বনি ব্রাক, মিয়া শিরিম এবং কিরিয়াত ইয়ারিমের গোঁড়া সম্প্রদায়গুলোতে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।
সম্প্রতি বনি ব্রাকের অলি-গলি ছেয়ে গেছে করোনা সচেতনতার পোস্টারে। এসবে দেখা যাচ্ছে, কনুই ভাঁজ করে কীভাবে হাঁচি দিতে হয়, এমন ধরণের প্রতীকী ছবি। আরো প্রতীক এঁকে উদ্বোধ্ব করা হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে থাকার। বলা হচ্ছে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে। কিন্তু এসব পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলছে স্থানীয়রা।

সরকারি পোস্টার ছিঁড়ে সেঁটে দেওয়া হচ্ছে নিজেদের কিছু পোস্টার। ওগুলোতে দেওয়া আছে কিছু ধর্মীয় উপদেশ। একটি পোস্টারে বড় করে লেখা আছে ‘মহামারি = বিনয়ের অভাব’। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে বিনয় ও সভ্যতার অভাবের কারণে এই মহামারি দেখা দিয়েছে। একই পোস্টারে মেয়ে ও মহিলাদের বিনয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদেরকে উগ্র পোশাক পরিহার করে নম্্র পোশাক পড়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ধর্মীয় বিধান মেনে চলতেও বলা হয়েছে।