ডায়াবেটিস রোগীর জন্য পরামর্শ

-

  • ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:১৫


এখানে কিছু ব্যায়াম ও খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো। এর মাধ্যমে একজন ডায়াবেটিস রোগী ওষুধের ওপর তার নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারবেন।


কম খাবেন


গরু ও মোষের গোশত।  কম খাবেন মাখন, মাখনের বিকল্প খাবার, কম ফ্যাটের বিস্কুট, ডিমের বিকল্প ...., ফ্যাটমুক্ত দই, কম ফ্যাটের পনির, সেঁকা আলু, সাদা রুটি ও ভাত।


বেশি খাবেন
মাছ, মুরগি ও পাখির গোশত, শিম, জলপাইয়ের তেল ও অন্যান্য সবজিজাত তেল, যেমন সয়াবিন ও ক্যানোলা তেল, আখরোট কিংবা বাদামজাতীয় খাবার ও সূর্যমুখী, কুমড়া, জলপাই, তাজা ফল, ডিম, ফেটা, পারমার তৈরী পনির ও ছাগলের দুধের পনির।


যদি আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস ধরা পড়ে থাকে, তবে নিশ্চয়ই ডাক্তার আপনাকে ওজন কমাতে বলেছেন। সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট এনডক্সিনোলজিস্ট ড. জোয়ান খো জো চিংয়ের পরামর্শ হচ্ছে আপনাকে ধীরে ধীরে ওজন কমিয়ে আনতে হবে। প্রতি সপ্তাহে এক কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে চেষ্টা করুন। ওজন কমানোর সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত উপায় হচ্ছে সচেতনভাবে খাবার খাওয়া। প্রতিদিন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ক্যালরির খাবার খান আর ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। দ্রুত হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালনা কিংবা সাঁতার কাটার মতো কাজগুলো করতে সচেষ্ট হোন। এসব কাজ দিনে কমপক্ষে পাঁচবার করতে চেষ্টা করুন।


এ ধরনের রোগীকে খাবার সম্পর্কে হতে হবে সচেতন। গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন, এসব রোগীর খাবারের উন্নততর উপায়। এর নাম মেডিটেরানিয়ান ওয়ে। যাদের সবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে, তাদের ওজন কমাতে এই উপায় অবলম্বন করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। এর মাধ্যমে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা গেছে ৫৬ শতাংশ লোকের। আর যারা একই ধরনের শারীরিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে কম চর্বিযুক্ত খাবার খেয়েছেন তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। মেডিটেরানিয়ান ডায়েটে যে কম কার্বোহাইড্রেট এবং হাই মোনাউন স্যাটুরেটেড ফ্যাট উপাদান থাকে, তা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমিয়ে দেয় বলে ধারণা করা হয় এ কথা জানিয়েছেন ড. খো।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে :আর লক্ষ রাখবেন


সিরটুইন সক্রিয় রাখা : Resveratrol নামে একটি রাসায়নিক আছে। এটি পাওয়া যায় লাল আঙুর ফলে। এই রাসায়নিক পশু ও মানুষের শরীরে রক্তে গ্লুকোজ কমিয়ে রাখে, যদি তা হাই ডোজে গ্রহণ করা যায়। sertuin তথা girt 1এ সক্রিয় করার মাধ্যমে রেসভারেট্রল কাজ করে। সিরটুইনগুলো হচ্ছে প্রোটিন। এই প্রোটিন মেটারলিজম তথা বিপাক প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের প্রভাব বিস্তার করে। যেমন গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে ও ইনসুলিয়ন উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। stirt ১ অ্যাক্টিভেটরগুলো রেসভারেট্রলের চেয়ে বেশি শক্তিধর। ডায়াবেটিস চিকিৎসায় stirt ১-এর সম্ভাবনা ব্যবহার নিয়ে এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।


ডায়াবেটিস ট্যাট্টু : ম্যাচাসুসেটসের ক্যামবিজে অবস্থিত ‘ড্র্যাপার ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন একটি Huorescent nanosensor, যা একটি tatto dye-এর মতো ইনজেকশনের মাধ্যমে চামড়ায় ঢুকিয়ে দেয়া যায়, যেসব ডায়াবেটিস রোগীর গ্লুকোজের মারাত্মক ভয়াবহভাবে বেড়ে যায়। যখন গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন এই 'tatto' রঙ বদলায় এবং জ্বলজ্বল করে ওঠে। এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয় ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ইনসুলিন ঢুকানো। আশা করা যাচ্ছে এই 'tatto' প্রতিস্থাপন করার ক্লান্তিকর ফিঙ্গার-প্রিক ব্লাড টেস্টিং। বললেন এই টেস্টের উদ্ভাবক ড. হিথার ক্লার্ক। তিনি বলেন, ‘যারা মাঝে মাঝে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে না, আমরা তাদের একটা অংশের কাছে এ টেস্ট পৌঁছাতে পারব। আমরা তাদের দিতে পারব কম ব্যথার একটি দ্রুত পরীক্ষার পদ্ধতি।


স্টেম সেল থেরাপি : ডায়াবেটিক রোগীদের ছোট একটি অংশে তাদের নিজস্ব স্টেম সেল ইনজেকশন কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে pancreatic islet cell পুনঃসৃষ্টি করার ক্ষেত্রে। এর ফলে তাদের আর ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনসুলিন নিতে হয় না। স্টেম সেল থেরাপি এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে। এখনো এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, যেমন স্টেম সেল থেকে নিউমার সৃষ্টির কোনো হুমকি আছে কি না, তা এখনো অজানা।