এশিয়ায় মার্কিন নৌশক্তি : ভারতের সঙ্গে বিরোধ বাড়ছে


  • আলফাজ আনাম
  • ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১৫:২৬

অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এশিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শক্তি থেকে পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতি বাস্তবায়নে ভারতকে প্রধান সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এখন নানা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে স্পষ্ট দূরত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে ভারত। আবার ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় নৌ অবস্থান নিয়েও ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র রূপ নিয়েছে। সম্ভবত এশিয়া নীতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন অবস্থান নিতে যাচ্ছে, যা ভারতের জন্য সুখকর নাও হতে পারে।

মার্কিন সপ্তম নৌবহরের একটি রণতরী ইউএসএস জন পল জোন্স সম্প্রতি ভারতের অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করলে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দিল্লি। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী ভারতের সমুদ্র সীমায় প্রবেশ করেছে। লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমের এই সমুদ্রাঞ্চলকে ভারত নিজের অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা বা ইইজেডের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। এ অভিযান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের পক্ষ থেকে আগে জানানো হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় দিল্লি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পেন্টাগন বলেছে, ফ্রিডম অব নেভিগেশনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এমন অভিযান আগেও চালিয়েছে, ভবিষ্যতেও চালাবে। এ ক্ষেত্রে ভারতকে অবহিত করার কোনো প্রয়োজন নেই। পেন্টাগনের এ প্রতিক্রিয়ায় ভারতের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৭ এপ্রিল, আরব সাগর থেকে এক বিবৃতি দেয় মার্কিন সপ্তম নৌবহর। এতে বলা হয়েছে, ‘ইউএসএস জন পল জোন্স ভারতের লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ১৩০ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে, ভারতের দাবিকৃত একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের অভ্যন্তরে ভারতের পূর্বানুমতি চাওয়া ছাড়াই প্রবেশের মাধ্যমে নৌচলাচল অধিকার এবং স্বাধীনতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘ভারতের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল বা মহাদেশীয় শেল্ফে সামরিক মহড়া বা কৌশল চালানোর জন্য পূর্বের সম্মতি প্রয়োজন বলে যা বলা হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

পেন্টাগনের বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন বাহিনী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিয়মিত ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব কার্যকলাপ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আন্ত র্জাতিক আইন যেখানেই অনুমতি দেয়; যুক্তরাষ্ট্র সেখানে যাবে, চলাচল করবে এবং জাহাজ পরিচালনা করবে। আমরা রুটিনভিত্তিতে এবং নিয়মিত ফ্রিডম অব নেভিগেশন অপারেশন্স পরিচালনা করি, যেমনটি আমরা অতীতেও করেছি। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখব। এফএনওপি কোনো একটি দেশ সম্পর্কিত বিষয় নয়, এটি রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার বিষয়ও নয়।

ভারতীয় সমর বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নৌযান পরিচালনার স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে ভারতের অতিরিক্ত সামুদ্রিক সীমার দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত সমুদ্রের অধিকার, স্বাধীনতা এবং আইনি ব্যবহারকে সমর্থন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ভারতীয় আইনের যুক্তি মেনে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এটি এমন এক সময় ঘটলো যখন অষ্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে নিয়ে এশিয়া ও প্রশান্তমাহসাগরীয় এলাকায় চীনকে মোকাবিলায় কৌশল নিয়ে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

ভারতীয় আইন-টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস, কন্টিনেন্টাল শেল্ফ, এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন অ্যান্ড আদার্স মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট, ১৯৭৬ অনুসারে, সাবমেরিন এবং অন্যান্য পানির তলদেশের যানবাহনসহ বিদেশী যুদ্ধজাহাজগুলো অভ্যন্তরীণ জলসীমায় প্রবেশ করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারকে পূর্ব নোটিশ দেয়ার পরে। ভারতের আপত্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি অবহিত করেনি। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে এটি জানানোর কোনা প্রয়োজন নেই। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময় এই অভিযান চালিয়েছে যখন ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়ছে। তাদের নৌবাহিনী ফরাসী নৌ বাহিনীর নেতৃত্বে জাপান, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকান নৌবাহিনীর সাথে ৫ এপ্রিল এবং ৭ এপ্রিলের মধ্যে লা পেরোস অনুশীলনে একটি যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছে।

৭ম নৌবহরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ফ্রিডম অব নেভিগেশনের আওতায় এ ধরনের অভিযানের ক্ষেত্রে ভারতের পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই। যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান লাক্ষা দ্বীপ ঘিরে থাকা ভারতের সোজা বেসলাইনগুলোর পক্ষে বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। ভারত ২০০৯ সালে গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ বেসলাইন প্রকাশ করে, যার মধ্যে লাক্ষা দ্বীপের চার পাশে সোজা বেসলাইনগুলো সমুদ্রের একটি নতুন অঞ্চলকে দেশের জলসীমার অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এতে লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের মধ্য দিয়ে যাওয়া কৌশলগত নয়-ডিগ্রি চ্যানেল এবং এডেন উপসাগরকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে সংযুক্তকারী আন্তর্জাতিক শিপিং লেনের অংশ ভারতীয় জলসীমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ২০০৯ সালের গেজেট বিজ্ঞপ্তির বৈধতাকে স্বীকৃতি দেয় না। তবে লাক্ষা দ্বীপের আশপাশে সোজা বেসলাইন তৈরির ব্যাপারে আনুষ্টানিক কোনো প্রতিবাদও জানায়নি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতির সাথে আগামি দিনে ভারতের মতভিন্নতা আরো তীব্র রূপ নিতে পারে। চীনের ক্লায়েন স্টেট হিসাবে পরিচিত মিয়ানমারকে চাপে রাখতে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগের যুক্তরাষ্ট্র তার নৌ উপস্থিতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিরক্ষা সহযোগী হিসাবে ভারত দাবি করলেও এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ উপস্থিতির ব্যাপারে ভারতের তীব্র আপত্তি রয়েছে। ইতোমধ্যে মিয়ামারের সামরিক জান্তার সাথে ভারতের ঘনিষ্টতা পশ্চিমা বিশ্বে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। বাস্তবতা হচ্ছে এশিয়া ও প্যাসেফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সরব নৌ উপস্থিতি রয়েছে। আসুন দেখে নেই এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌ উপস্থিতির চিত্র।

পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাহরাইনে অবস্থান করছে পঞ্চম নৌবহর। এর হেড কোয়ার্টার বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর।

বাহরাইনে ১৯৭১ সালে নৌঘাঁটি স্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এই নৌঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই নৌবহর পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর এবং পূর্ব আফ্রিকা ও কেনিয়ায় মার্কিন সামরিক প্রভাব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে। আফ্রিকার জিবুতিতে যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটিও এই নৌবহরের আওতাভুক্ত। ইরাক যুদ্ধে এই নৌবহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাহরাইন ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দু’টি নৌঘাঁটি রয়েছে। এর একটি ফুজাইরাহতে, অপরটি দুবাইয়ের পোর্ট জুবেল আলীতে। এ ছাড়া কাতারে রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এই নৌবহর ও সামরিক ঘাঁটি থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন নৌ-আধিপত্য বজায় রাখছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর বা সপ্তম নৌবহর। দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের ওপর নজর রাখে এই নৌবহর। জাপানের ইয়োকোসুকায় এই হেডকোয়ার্টার দক্ষিণ কোরিয়ারও কাছাকাছি। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে এই নৌবহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর সপ্তম নৌবহর। ১০টি টাস্কফোর্সে ৫০ থেকে ৬০টি জাহাজ, ৩৫০টির মতো এয়ারক্রাফট, ৬০ হাজার নৌ ও মেরিন সৈন্য এই নৌবহরে দায়িত্ব পালন করে।

সপ্তম নৌবহরের আওতায় এশিয়ার সমুদ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ১৫টির বেশি জাহাজ স্থায়ীভাবে মোতায়েন রয়েছে। সপ্তম নৌবহরের আওতায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

পশ্চিম প্রশান্ত মহসাগরের দ্বীপ গুয়াম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর একটি গুয়াম। ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটির ৩৯ শতাংশ মার্কিন সামরিক স্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মার্কিন নৌঘাঁটি ছাড়াও অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি, অপরা পোতাশ্রয়, নেভাল কম্পিউটার ও টেলিকমিউনিকেশন স্টেশন এবং জয়েন্ট ফোর্সের হেড কোয়ার্টার রয়েছে।গুয়াম নৌঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ সাবমেরিন স্কোয়াড্রন-১৫ কমান্ডারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর, সপ্তম নৌবহর ও পঞ্চম নৌবহরের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করা হয় গুয়াম থেকে। গুয়ামের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলো বিমান হামলা করে থাকে। আসুন আমরা জেনে নেই ভারত মহাসগারীয় এলাকায় সামরিক ঘাটি গুলো সর্ম্পকে কিছু তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি ঘাটি রয়েছে দিয়েগো গার্সিয়ায়। ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপ। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই দ্বীপটি ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে ১২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে এবং আফ্রিকা উপকূল থেকে ১৮০০ নটিক্যাল পূর্বে। এ দ্বীপে নৌবহরের অনেক জাহাজ ও সাবমেরিন সহায়ক ঘাটি রয়েছে। এ ছাড়া সামরিক বিমানঘাঁটিও রয়েছে।

গভীর সমুদ্রে মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজগুলো ভেড়ার মতো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভবন এবং বিশাল এয়ার টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এ দ্বীপে। একসময় ভারতের পক্ষ থেকে দ্বীপটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সমালোচনা করা হলেও এখন আর ভারতের রাজনীতিবিদেরা এর সমালোচনা করেন না। ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সেনাবাহিনী দিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।

জাপানে বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনীর অনেক ঘাঁটি রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় এসব ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে ইয়োকোসুকাতে, তৃতীয় মেরিন এক্সপিডিটেশনারি ফোর্সের ঘাঁটি রয়েছে ওকিনাওয়া দ্বীপে, মার্কিন বিমান বাহিনীর দু’টি ঘাঁটি রয়েছে মিসওয়া ও কাদিনা দ্বীপে। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন দ্বীপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।

সপ্তম নৌবহরের কমান্ড শিপ ইউএসএস ব্লু রিজ-এর অবস্থান ইয়োকোসুকায়। এখানে রয়েছে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জর্জ ওয়াশিংটন, ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন-১৫-এর অবস্থানও এখানে। জাপানের পর এশিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি ঘাঁটি রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে রয়েছে নৌঘাঁটি। সপ্তম নৌবহরের আওতায় এই নৌঘাঁটি পরিচালিত হয়।

এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌশক্তির উপস্থিতিতে বাংলাদেশ দৃষ্টির বাইরে নয়। কৌশলগত দিক দিয়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব রয়েছে। প্রচ্ছন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের মধ্যে বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা রয়েছে। যার একটি পক্ষ মিয়ানমার। আগামি দিনে এ অঞ্চলে এই প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা আরো তীব্র রূপ নিতে পারে।