সৌদি আরবে মোতায়েন হবে ইসরাইলি আয়রন ডোম

ইসরাইলি আয়রন ডোম - সংগৃহীত

  • মেহেদী হাসান
  • ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪৯

সৌদি আরবে নিরাপত্তার জন্য ইসরাইলের আয়রন ডোম সিস্টেম মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলের আয়রন ডোম সিস্টেম হলো এক ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি তেল ক্ষেত্রে হামলার পর সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ আয়রন ডোম সিস্টেম মোতায়েনের পরিকল্পনার কথা জানায় মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ। সৌদি আরবের উত্তরে ইরাক এবং ইরানকে লক্ষ্য করে এ আয়রন ডোম সিস্টেম মোতায়েন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সৌদি আরবে মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের পর তেল ক্ষেত্রে হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। আবারো যেনো এ ধরনের হামলার ঘটনা না ঘটে সে জন্য ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবং সৌদি আরবের যাবতীয় সম্পদ রক্ষার কার্যকরী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরাইলের আয়রনডোম ডিফেন্স সিস্টেমকে সবচেয়ে ভাল উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বর্তমানে ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন হামলার ঠেকানোর ভাল কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। আয়রন ডোম উদ্ভাবন করেছে ইসরাইলের রাফায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের রেথিয়ন কোম্পানী।

গাজা থেকে হামাসের ছোড়া স্বল্প পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র হামলা ঠেকানো ছিল এর প্রাথমিক লক্ষ্য। ইসরাইল দাবি করছে গাজা, লেবানন ও সিরিয়া থেকে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা প্রতিহত কারা ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খুব সফলভাবে কাজ করেছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত আয়রন ডোম প্রযুক্তি ১ হাজার ৭০০টি রকেট, আনগাইডেড মিসাইল ও মর্টারশেলের হামলা ঠেকিয়েছে। আয়রন ডোম সিস্টেম বিমান, ড্রোন, বৃহৎ আর্র্টিলারি শেল এমনকি ব্যালিস্টিক মিসাইলও প্রতিহত করতে সক্ষম। ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি ইরানের একটি ফাতাহ ব্যালিস্টিক মিসাইল ভূপাতিত করে আয়রন ডোম।


ইতোমধ্যে ইসরাইলের কাছ থেকে দুটি আয়রন ডোম ব্যাটারি কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র। খুব শীঘ্রই তার ডেলিভারি পাবে। প্রতিটি আয়রন ডোম ব্যাটারিতে ২০টি ইনসেপ্টর মিসাইল ও একটি রাডার সিস্টেম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের কাছ থেকে ২৪০টি ইনসেপ্টর মিসাইল, ১২টি লঞ্চার এবং দুটি রাডার সিস্টেম কিনছে । এগুলো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে।


ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন সনাক্তকরনের জন্য সৌদি তেল ক্ষেত্রের আশপাশে সাময়িকভাবে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও রডার মোতায়েন করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ক্রজ মিসাইল ও ড্রোন হুমকি মোকাবেলায় সৌদি আরবে নিয়োজিত মার্কিন আর্মি ও এয়ার ফোর্স সেনাদের প্রশিক্ষন গ্রহন করতে হবে। কারন এ ধরনের মিশনের জন্য সেখানে অবস্তান করা সেনানা প্রশিক্ষিত নয়। এ ক্ষেত্রে ইসরাইলের কাছ থেকে তারা প্রশিক্ষন নিতে পারে। ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন হুমকি মোকাবেলা করে আসছে। দ্বিপাক্ষিকভাবে ইসরাইল এ প্রশিক্ষন দিতে পারে এবং ইসরাইলী সেনাদের কেউ কেউ মার্কিন সেনাদের সাথে সংযুক্তও হতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুমতির প্রয়োজন হবে । আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা এ ধরনের সাহায্য প্রত্যাখ্যান করবে না বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞারা বলছেন, সৌদি আরবে মার্কিন সৈন্য ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যতই উন্নত করা হোক না কেন সেখানে তাদের গোয়েন্দা কার্যক্রমের অভাব রয়েছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপেরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।